জুন-জুলাইয়ের মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব : রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহল কবির রিজভী বলেছেন, নির্বাচন কমিশন যদি সঠিকভাবে কাজ করে তবে ডিসেম্বর কেন জুন-জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব।

শুক্রবার রাজশাহীতে জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও আইনশৃংখলা বাহিনীর গুলিতে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে আহত ও শহিদ পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ ও অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলে তিনি।

নির্বাচন করতে এতো সময় লাগবে কেন প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, এ নির্বাচন ১৫ বছর শেখ হাসিনা আটকে রেখেছিলেন। ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেনি। ভোটাররা যাওয়ার আগে তাদের ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। দিনের ভোট রাতে হয়েছে। আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা, আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান সবগুলো পা দিয়ে দুমড়ে মুচড়ে ধংস করে দেওয়া হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোকে সজিব করতে হবে; প্রণবন্ত করতে হবে। এগুলোর জন্য এতো গরিমশি কেন প্রশ্ন তুলেন রুহল কবীর রেজভী।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি সঠিকভাবে কাজ করে তবে ডিসেম্বর কেন জুনের মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব; জুলাইয়েই নির্বাচন করা সম্ভব। কারণ দেড় যুগ ধরে জনগণ ভোট দিতে পারে না। আর এটা নিয়ে গড়িমশি করা হলে জনগণের মধ্যে তো সন্দেহ জাগবে এই অন্তবর্তি সরকারের প্রতি।

আরও পড়ুনঃ   কোনও বিশেষ সুবিধায় নয়, আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্ত হতে চান তারেক রহমান

তিনি বলেন, আমরা মনে কনি অন্তবর্তিকালিন সরকারই তত্ববধায়ক সরকার। ফলে এ সরকার সুন্দর নির্বাচন করতে পারবো। নির্বাচন নিয়ে গড়িমশি গ্রহনযোগ্য নয়।

রিজভী বলেন, পুলিশ যাতে কোন দলের পক্ষপাতিত্ব করতে না পারে। আইনশৃংখলা বাহিনী যাতে সরকারের বাহিনী হয়ে জনগনের উপর অত্যাচার করতে না পারে সেই সংস্কারগুলো করতে কতক্ষণ সময় লাগে। সেই আইনগুলো করুন। আর এই আইন করতে তো নির্বাচিত সরকার দরকার। নির্বাচিত সরকার না হলে কি করে এটা সম্ভাব। এ জন্য আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দরকার।

ভারতের সমালোচনা করে রুহুল কবির আরও বলেন, ‘অবাক লাগে যে প্রায় দেখি আমেরিকায় গেলে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা করে ভারত। ভারত আমেরিকার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা করছে। আজকেও সংবাদপত্রে দেখলাম, ভারত যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা করছে। কেন? বাংলাদেশে সরকার নেই? এটি একটি স্বাধীন দেশ নয়? এর একটি স্বাধীন পতাকা আছে, জাতীয় সংগীত আছে। আপনি পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র, আলাদা স্বাধীন দেশ। বাংলাদেশকে নিয়ে আপনার এত মাথাব্যথা কেন? বাংলাদেশ নিয়ে অন্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করার অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে?’

আরও পড়ুনঃ   বাগমারায় নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

ভারত শেখ হাসিনার দোসরদের বাগানবাড়িতে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমার দেশের কী হচ্ছে, না হচ্ছে, আমাদের সরকার আছে, বিরোধী দল আছে, জনগণ আছে, আইনকানুন আছে, তারা কথা বলবে। আপনারা কারা যে অন্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করবেন? আজ ভারত শেখ হাসিনার দোসরদের বাগানবাড়িতে পরিণত হয়েছে। কারণ, হাসিনার মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশকে একটি তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। ভারত যা চাইত, শেখ হাসিনা ভারতকে তা-ই দিয়ে দিতেন। এভাবে নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতেন।’

নগরীর ভূবন মোহন পার্কে আমরা বিএনপি পরিবার এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এখানে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে অনুদানের চেক তুলে দেন রুহল কবির রিজভী।

আমরা বিএনপি পরিবারের আহবায়ক আতিকুর রহমান রুম্মনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির আহবায়ক এরশাদ আলী ইশা, সদস্য সচিব মামুন অর রশিদ, আমরা বিএনপি পরিবারের সদস্যসচিব মোকছেদুল মোমিন।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকার, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নজরুল হুদা প্রমূখ।