ব্রিটেনে অবৈধ অভিবাসী ধরতে ভারতীয় রেস্তোরাঁগুলোতে অভিযান-ধরপাকড়

অনলাইন ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে চলছে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান। এতে অন্যান্য দেশের নথিপত্রহীন অভিবাসীদের মতো আটক হয়ে নিজ দেশে ফিরছে অবৈধ ভারতীয়রাও। এবার যেন ট্রাম্পের পথেই হাঁটা শুরু করল যুক্তরাজ্যও।

ইউরোপের এই দেশটি এবার অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে। দেশটিতে বহু অবৈধ ভারতীয় রয়েছে এবং অন্যান্যদের মতো তাদেরও ধরতে ভারতীয় রেস্তোরাঁগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন নেইল বার, কনভেনিয়েন্স স্টোর ও কার ওয়াশের স্থানগুলোতে চালানো এই অভিযানে চলছে ধরপাকড়।

মূলত এসব স্থানেই অবৈধ অভিবাসীদের নিয়োগ করা হয়ে থাকে। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন ক্র্যাকডাউনের পথে হেঁটে যুক্তরাজ্যের সরকার দেশটিতে অবস্থানরত অবৈধ অভিবাসী ও তাদের কাজের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে। “ইউকে-ওয়াইড ব্লিটজ” নামের এই অভিযানে ভারতীয় রেস্তোরাঁ, নেইল বার, কনভেনিয়েন্স স্টোর এবং কার ওয়াশের স্থানগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, এসব স্থানেই অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়োগ করা হয়ে থাকে।

আরও পড়ুনঃ   মধ্যপ্রাচ্যে ঈদ হতে পারে ১০ এপ্রিল

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, গত কয়েক দিন ধরেই একের পর এক ভারতীয় রেস্তরাঁ, গাড়ি পরিষ্কার করার দোকানে অভিযান চালাচ্ছেন সেখানকার প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইউভেট কুপারের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উত্তর ইং‌ল্যান্ডের হামবারসাইড এলাকার একটি ভারতীয় রেস্তরাঁ থেকেই সাত জনকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া একই সন্দেহে আটক করা হয়েছে আরও চার জনকে।

এই অভিযান নিয়ে ইতোমধ্যেই মুখ খুলেছেন ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কুপার। তিনি বলেছেন, “অভিবাসন আইন অবশ্যই মেনে চলা উচিত”। পূর্ববর্তী কনজারভেটিভ পার্টির সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, “বহুদিন ধরে নিয়োগকারীরা অবৈধ ভাবে শ্রমিক নিয়োগ করে তাদের শোষণ করেছেন। এই সমস্ত শ্রমিক অবৈধভাবে কাজ করে গেলেও কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।”

ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত জানুয়ারি মাসেই ৮২৮টি জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে। গত বছরের জানুয়ারি মাসের তুলনায় এই ধরনের অভিযানের সংখ্যা ৪৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এক মাসে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৬০৯ জন।

আরও পড়ুনঃ   আরও ১০০ বছর বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ থাকবে ভারত : জাতিসংঘ

ভারতীয় সংবাদসংস্থা পিটিআই-এর প্রতিবেদন অনুসারে, গ্রেপ্তারের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ৭৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈধ পরিচয়পত্রহীন শ্রমিকদের নিয়োগ করার জন্য নিয়োগকারী সংস্থা কিংবা ব্যক্তিকে ১০৯০টি নোটিশও পাঠিয়েছে ব্রিটিশ সরকার।

মূলত ব্রিটেনের রাজনৈতিক পরিসরে ক্রমশ নিজেদের অবস্থান জোরালো করছে ‘রিফর্ম ইউকে’-র মতো কট্টরপন্থি দলগুলো। এই দলগুলো কঠোর অভিবাসন নীতি প্রণয়নের পক্ষে। সেক্ষেত্রে বহুমুখী চাপের সামনে অভিবাসন নীতি কঠোর করার পক্ষেই হাঁটতে পারে ব্রিটেনের বর্তমান ক্ষমতাসীন লেবার সরকার।

অবৈধ অভিবাসী ধরতে চলতে পারে ধারাবাহিক অভিযান। আর তাই ট্রাম্পের পথে হেঁটেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের সরকার অবৈধ অভিবাসীদের বিমানে চাপিয়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে ফেরত পাঠাতে শুরু করবে কিনা, তা নিয়ে ইতোমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে।