‘ঋণের টাকায় সিকি পরিমাণ উন্নয়ন, বাকিটা লুটপাট হয়েছে’

স্টাফ রিপোর্টার : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল হক আজাদ বলেছেন, পতিত আওয়ামী লীগ সরকার যে পরিমাণ বিদেশি ঋণ নিয়েছে তার সিকি পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে। বাকি টাকা লুটপাট করেছেন মন্ত্রী-এমপিরা। আওয়ামী লীগের মতো এমন চোর পৃথিবীতে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।

আজ শুক্রবার বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাজশাহী জেলা ও মহানগরের সদস্য সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আব্দুল হক আজাদ এসব কথা বলেন। দলের রাজশাহী জেলা ও মহানগর এই সদস্য সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন দলটির মহানগর সভাপতি হাফেজ মাওলানা মুরশিদ আলম ফারুকী।

রাজশাহী নগরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত এই সভায় মাওলানা আব্দুল হক আজাদ বলেন, ‘এই ১৬ বছরে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে তাদের প্রত্যেকটা নেতা-কর্মী একটাই কথা বলেছে যে, স্বাধীন হওয়ার পর থেকে তারা দেশের যে উন্নয়ন করেছে তা আর কেউ করেনি। কিন্তু তারা দেশের জন্য যা কিছু করেছে, ক্ষতি কিন্তু তার চেয়ে লক্ষগুণ বেশি করেছে। একটা সরকারের এ রকম মন্ত্রী-এমপি ৯৮ শতাংশ চোর হওয়ার নজির পৃথিবীর ইতিহাসে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। এটা আওয়ামী লীগেই ছিল।’

আরও পড়ুনঃ   রাজশাহীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ২১

আব্দুল হক আজাদ আরও বলেন, ‘এখন আপনারা বলতে পারেন, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ তো বিশ্বরোড করেছে। এই যে বিশ্বরোড করেছে, উন্নয়ন দেখতেছেন, আমরা মনে করছি যে হাসিনাই করেছে। অনেকে জানি না, আসলে এই যে বিশ্বরোডটা হচ্ছে এটা আসলে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, অর্থাৎ এডিবির টাকায় করা হচ্ছে। তাতে হাসিনা, সরকার এমনকি বর্তমান সরকারের সঙ্গেও ন্যূনতম সম্পর্ক নাই। এটা কিন্তু হাসিনার উন্নয়ন না।’

পদ্মা সেতু নির্মাণে আওয়ামী লীগের কৃতিত্ব নেই উল্লেখ করে এই নেতা বলেন, ‘বলতে পারেন আওয়ামী লীগ পদ্মা সেতু করেছে। আমি যদি কষ্ট করে উপার্জন করে একটা তিনতলা বিল্ডিং করি, মানুষ আমাকে সাধুবাদ জানাবে, মোবারকবাদ জানাবে। আর যদি মানুষের থেকে লোন নিয়ে তিনতলা বিল্ডিং করি, মানুষ আমাকে বেহায়া বলবে। হাসিনা যখন ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এলেন, তখন বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ ছিল দুই লাখ হাজার কোটি টাকা। আর ২০২৪ সালে ঋণের পরিমাণ হয়েছে ১৮ লাখ হাজার কোটি টাকা। ঋণ বেড়েছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। আজ ১৭ কোটি মানুষের মাথার ওপর আড়াই লাখ টাকা ঋণ। এই যে পদ্মা সেতুর কথা বলেন, তারা এত টাকা লোন নিয়ে সিকি পরিমাণ উন্নয়ন করেছে, বাকিটা লুটপাট করেছে। তারা ১৭ কোটি মানুষকে বিদেশিদের কাছে জিম্মি করেছে।’

আরও পড়ুনঃ   রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের উদ্যোগে নিম্ন আয়ের কর্মচারীদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের মালয়েশিয়া শাখার সভাপতি মুফতি আমিরুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মির্জা হুমায়ুন কবীর রুবেল, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের রাজশাহী জেলার সভাপতি মুফতি ইয়াকুব আলী ও জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের জেলা সভাপতি মাওলানা আহমাদুল্লাহ। সম্মেলনে প্রধান আলোচক ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা হোসাইন আহমদ।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সভাপতি মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলাম, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সভাপতি মুহাম্মাদ হাসিবুর রহমান, মহানগর সভাপতি তোফাজ্জল হোসাইন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার, মহানগর সভাপতি আজিজুল হক প্রমুখ।