ঈশ্বরদীতে ৪৪ চালকলের নিবন্ধন বাতিল: সরকারি গুদামে চাল না দেওয়ায়

পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার ঈশ্বরদীতে সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ না করায় ৪৪টি চালকলের লাইসেন্স বাতিল করেছে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঈশ্বরদী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহিনুর আলম।

তিনি বলেন, যারা চাল সরবরাহে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। সরকারি যেকোনো কাজে চুক্তিবদ্ধ হলে তা বাস্তবায়ন না করতে পারলে অপরাধ বলে গণ্য হবে।

খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্র থেকে জানা গেছে, ঈশ্বরদীতে মোট ১৪৩টি চালকলের মধ্যে চুক্তির আওতায় আনা সম্ভব হয়েছিল ৯৯টি। এর মধ্যে ৮৩টি চালকল চুক্তির পুরো চাল সরবরাহ করেছে, ১৬টি আংশিক চাল দিয়েছে এবং ৪৪টি চালকল কোনো চাল সরবরাহ করেনি। ফলে এ মৌসুমে ঈশ্বরদীতে মোট সংগ্রহ হয়েছে ৪ হাজার ৬৪৩ মেট্রিক টন চাল, যা চুক্তির মাত্র ৬৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। চুক্তির আংশিক চাল সরবরাহ করা চালকলগুলোর জামানতও অনুপাতে বাতিল করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ   বড়াইগ্রামে একরাতে গ্রাহকের ১২টি মিটার চুরি, এক চোর হাতেনাতে আটক

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে ঈশ্বরদী সরকারি গুদামে চাল সরবরাহের জন্য ৯৯টি চালকল চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। এসব চালকলের মাধ্যমে সেদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭ হাজার ২৫৮ মেট্রিক টন। প্রতি কেজি সেদ্ধ চাল ৪৭ টাকা এবং আতপ চাল ৪৬ টাকা দরে কেনা হয়।

চাল সরবরাহে ব্যর্থ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চালকল মালিক বলেন, এক কেজি চাল উৎপাদন করতে খরচ ৫২ থেকে ৫৪ টাকা খরচ হয়। সরকারি গুদামে সে চাল ৪৫ টাকা কেজি দরে সরবরাহ করতে হয়। সব চালকল মালিকের পক্ষে চাল সরবরাহ করা সম্ভব নয়। সেজন্য অনেকেই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করতে পারেননি। ৫৪ টাকার বেশি হলে সবাই যার যার দায়িত্ব পালন করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু লোকশান দিয়ে ব্যবসা করবে না কেউ।

আরও পড়ুনঃ   একটি সুন্দর পৃথিবী গঠনের জন্য রবীন্দ্রনাথের জন্ম : পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী

আরেকজন চালকল মালিক বলেন, সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহে লোকসান হয়। আমরা কয়েকবার দর পুনরায় নির্ধারণের আবেদন করেছিলাম। সরকারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কোনো আলোচনার সুযোগ হয়নি। তাই চাল সরবরাহ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি।

ঈশ্বরদী উপজেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল হক দুলাল মণ্ডল বলেন, সরকার নির্ধারিত দামে চাল সরবরাহ করে আমি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমার প্রায় ১২ টন চাল সরবরাহে ৩৪ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। লোকসান দিয়ে অনেকের পক্ষে চাল সরবরাহ সম্ভব না। সরকারি যদি সঠিক রেট দেয় তাহলে সব ব্যবসায়ীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে চাল সরবরাহ করবে।

পাবনা জেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক হাসান আল নাঈম বলেন, যে সব চালকল আমাদের সঙ্গে চুক্তি করেনি তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।