গুম হওয়া ব্যক্তির স্ত্রীকে ধর্ষণের প্রমাণ পেয়েছে ট্রাইব্যুনাল

অনলাইন ডেস্ক : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, আজ ট্রাইব্যুনালে ৩য় পিটিশন ছিল পুলিশের সাবেক এডিশনাল এসপি এবং র‍্যাবের সাবেক কোম্পানি কমান্ডার আলেপ উদ্দিনের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সবচেয়ে মারাত্মক। তিনি অসংখ্য মানুষকে গুম ও নির্যাতন করার সঙ্গে জড়িত। অনেককে এই আলেপ উদ্দিন গুম করে বছরের পর বছর আটকে রেখেছিল। তাদের নিষ্ঠুরতম পন্থায় নির্যাতন করেছিল।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, বৈদ্যুতিক শক দেওয়া, চোখ বেঁধে রাখা, উল্টো করে ঝুলিয়ে পেটানোর অভিযোগ এই আলেপ উদ্দিনের বিরুদ্ধে।

মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, সবচেয়ে মারাত্মক কাজ এই আলেপ উদ্দিন করেছিলেন, একজন আসামিকে গুম করে রাখার সময়ে তার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া স্ত্রীকে ভয় দেখিয়ে (স্বামীকে হত্যার) রমজান মাসে রোজা ভাঙিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে। এমন তথ্য প্রমাণ আমাদের হাতে এসেছে। আমরা বিষয়গুলো ট্রাইব্যুনালকে জানিয়েছি। এমন নিষ্ঠুরতম অপরাধীর অপরাধের তদন্ত করতে সময় লাগবে, কারণ প্রতিদিনই ভিকটিমরা আমাদের কাছে নতুন নতুন অনেক অভিযোগ নিয়ে আসছেন। এসব তদন্ত শেষ হলে তাদের ব্যাপারে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া যেন শুরু করা যায় সে জন্য আমাদের তদন্ত সংস্থা দিন রাত কাজ করছে।

আরও পড়ুনঃ   পবায় ৫০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১

এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে জুলাই আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক পুলিশ প্রধান এবং এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালকসহ ১০ কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। আজ তাদের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ও কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আসা দুটি পৃথক প্রিজন ভ্যানে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা এসব সাবেক কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছে— সাবেক পুলিশ প্রধান (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান, ঢাকা জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল কাফি, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান, ডিএমপি মিরপুরের সাবেক ডিসি মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা, ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুর ইসলাম, ডিবি ঢাকা উত্তরের সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন এবং ডিএমপি গুলশান থানার সাবেক ওসি মো. মাজহারুল হক।

আরও পড়ুনঃ   ট্রাইব্যুনালের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো কনস্টেবল সুজনকে

এছাড়া র‍্যাবের দুই সাবেক কর্মকর্তাকেও হাজির করা হয়। তারা হলেন—সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) মহিউদ্দিন ফারুকী ও বরিশাল রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন।

এর আগে গত ২৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল প্রসিকিউশনের আবেদন মঞ্জুর করে তাদের হাজির করতে আদেশ দিয়েছিলেন।-ঢাকা পোস্ট