স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর তানোরে শয়নকক্ষে চাঞ্চল্যকর জোহরা বেগম (৪৫) হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। এ হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে নিহত জোহরার পুত্রবধূ সোনিয়া আক্তার রুমি (২২) ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। রোববার আদালতে রুমির জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়। এ নিয়ে সোমবার নিজ দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে জোহরা হত্যার বিস্তারিত জানান রাজশাহী জেলা পুলিশ শহিদুল্লাহ।
গত ৩ অক্টোবর তানোরের পাঁচন্দর ইউনিয়নের কচুয়া জিতপুর গ্রামের নিজের শয়নকক্ষে খুন হন জোহরা বেগম। পরে পুলিশ গিয়ে তার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এ সময় আহত অবস্থায় জোহরার পুত্রবধু রুমিকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।
রুমির আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তির বরাদ দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ জানান, ঘটনার দিন শাশুড়ি পুত্রবধূর ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে রাত পৌনে ৯টার বাড়ির আঙ্গিনায় দিকে শাশুড়ি তার পুত্রবধূ রুমিকে মারতে যায়। এ সময় রুমি তার শাশুড়িকে প্রথমে বাদ দিয়ে আঘাত করে। এতে জোহরা মাটিতে পড়ে যায়। এর পর সে জোহারার মুখে আঘাত করলে নাক দিয়ে রক্ত বের হয়। পরে টেনে হিচড়ে জোহরাকে ঘরে নিয়ে যায় রুমি। ঘটনাটি স্বামীকে বলে দেয়ার ভয়ে চাপাতি দিয়ে জবাই করে জোহরার মৃত্যু নিশ্চিত করে। জবাই করার সময় তাড়াহুড়া করতে গিয়ে রুমির হাতে আঙ্গল কেটে যায়। এর পরে বাহিরে গিয়ে রুমি বাচাঁও বাচাঁও বলে চিৎকার করে জ্ঞ্যন হারিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। তবে তার জ্ঞ্যন হারানোর বিষয়টি ছিল অভিনয়।
পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ বলেন, ঘটনাস্থলের অবস্থান বিশ্লেষন করে আগে থেকেই পুত্রবধূর উপর সন্দেহ হচ্ছিল। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রুমির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে রোববার তাকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে নিবির জিজ্ঞাবাদ করা হয়। প্রায় চার ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রুমি জোহরা হত্যার বর্ণনা দেয়। এর পর তাকে আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়।
প্রায় ২০ বছর আগে জোহরার স্বামী হেলালের সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়। এর পর থেকে জোহরা ছেলে জাহাঙ্গীরকে নিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করতেন। ছেলে জাহাঙ্গীরের বিয়ের পর থেকে পুত্রবধূ রুমি ও তাদের মেয়ে জুঁই জোহরার সঙ্গে থাকেন। ছেলে জাহাঙ্গীর চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুবালী ব্যাংকের নাইট গার্ড পদে চাকরি করেন।