স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে চাকরিতে নিয়োগ ও মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রেলওয়ের বিভিন্ন পদে চাকরির জন্য তারা ৭ থেকে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এরা রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর আত্মীয়।
এই দম্পতি হলেন- রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার দড়িখরবোনা এলাকার মো. সাদেকুজ্জামানের ছেলে নাহিদুজ্জামান পাপ্পু (৩০) ও পাপ্পুর দ্বিতীয় স্ত্রী বাঁধন জামান (২৮)। পাপ্পুর বাবা সাদেকুজ্জামান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর মামাতো ভাই। এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর মালিকানাধীন থিম ওমর প্লাজার প্রশাসনিক কর্মকর্তা ছিলেন পাপ্পু। সোমবার রাতে প্রতারিতরা বাড়ি ঘেরাও করলে পাপ্পুকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়।
মঙ্গলবার সারাদিন প্রতারিত চাকরিপ্রার্থীরা নগরীর সপুরা এলাকায় পাপ্পুর বাড়ি ঘেরাও করে রাখেন। খবর পেয়ে রাতে পুলিশ গিয়ে পাপ্পুকে বাড়ি থেকে আটক করে থানায় নেয়। এ সময় সেখানে ছিলেন তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী বাঁধন জামান। বাঁধন সাংবাদিকদের বলেন, এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী সব টাকা নিয়েছেন। তবে তার স্বামীকে ৩০ শতাংশ দেওয়ার কথা ছিল।
এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘পাপ্পুর বাবা আমার মামাতো ভাই। তার বাবা-মা এসে অনুরোধ করেছিল বলে পাপ্পুকে থিম ওমর প্লাজার অ্যাডমিন অফিসার হিসেবে চাকরি দিয়েছিলাম। পরে তার বিষয়ে এসব কথা কানে আসে। তাই প্রায় ২৫ দিন আগে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। পাপ্পুর স্ত্রী মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন। এর ভিডিও আমি দেখেছি। প্রমাণ ছাড়া কথা বলায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।’
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র রফিকুল আলম জানিয়েছেন, পাপ্পু ও তার স্ত্রী বিভিন্নজনকে চাকরি দেওয়া ও মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করে দেওয়ার কথা বলে প্রায় প্রায় ৮৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। রেলওয়ের বিভিন্ন পদের চাকরির জন্য তারা ৭ থেকে ১০ লাখ টাকা নিতেন। বিনিময়ে টাকার অংক বসানো সই করা চেক কিংবা স্ট্যাম্প দিতেন। আসামিরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে সহজ সরল ব্যক্তিদের চাকরির প্রলোভন দিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন।
নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন জানান, পাপ্পুকে থানায় নেওয়ার পর প্রতারিতদের মধ্যে জনি আহমেদ নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। মামলায় পাপ্পুর স্ত্রীকেও আসামি করা হয়। পরে তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার দুপুরে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের সঙ্গে আর কে কে এ প্রতারণায় জড়িত তা জানার চেষ্টা করা হবে। এ জন্য আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পরবর্তীতে তাদের আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।