ভাতিজা-শ্যালিকা-ছেলের বউকে দিয়েছেন চাকরি,জনরোষে পড়েছেন প্রধান শিক্ষক

90

স্টাফ রিপোর্টার: অনিয়ম করে নিজের ভাতিজা, শ্যালিকা, ভাইয়ের মেয়ের স্বামী ও ছেলের বউকে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী নগরীর গুলজারবাগ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে। সর্বশেষ তিনি স্কুলের কম্পিউটার অপারেটর পদের জন্য নিজ ছেলে তামিম হোসেনের বউকে কয়েক দিন আগে চাকরি দিয়েছেন বলে দাবি এলাকাবাসীর। এতে তাদের রোষে পড়েছেন তিনি।

এর জের ধরে গত বৃহস্পতিবার এলাকাবাসী স্কুলে গিয়ে ওই শিক্ষকের এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করেছেন। প্রতিবাদের মুখে স্কুল ছেড়ে পালিয়েছেন প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন। স্থানীয়রা জানান, সর্বশেষ চারটি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আপন ছেলের বউকে চাকরি দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন।

এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানান, এই স্কুলটিতে লেখাপড়া তেমন হয় না। শিক্ষার্থীর সংখ্যাও খুব অল্প। মোট শিক্ষার্থীর খুব কম সংখ্যকই স্কুলে আসে। এসব সমস্যা সমাধানে প্রধান শিক্ষকের মন নেই। তিনি মনোযোগী শুধু নিয়োগে। তিনি স্কুলটিতে নিজের শ্যালিকা, ভাইরা ভাই, ভাতিজা ও পূত্রবধূকে নিয়োগ দিয়েছেন। এসব দেখে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ। সম্প্রতি চারটি পদের বিপরীতে আবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এই নিয়োগ দিয়ে তিনি মোটা অংকের অর্থ বাণিজ্যের চেষ্টা করছেন।

বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর নগরীর গুড়িপাড়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দেয়। এ নিয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এলাকাবাসী ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনকে ঘিরে ধরেন। এ সময় তারা আমজাদ হোসেনের ছেলের বউ কুসুম খাতুন মৌসুমিকে নিয়োগ দেওয়া হলো কিন্তু অন্য তিনটি পদে স্থানীয়দের কেন চাকরি দেওয়া হয়নি প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদ জানান। একপর্যায়ে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনকে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্কুলে আসতে নিষেধ করেন।

স্থানীয় বাবু নামের এক ব্যক্তি বলেন, স্কুলে মোট ১১ জন শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে পাঁচজনই প্রধান শিক্ষকের আত্মীয়-স্বজন। বাকি ছয়জনের কাছ থেকেও মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে বিভিন্ন সময় নিয়োগ দিয়ে বিপুল সম্পদের মালিক বনে গেছেন তিনি।

মখলেছুর রহমান বাবু নামের আরেকজন বলেন, প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনের গ্রামের বাড়ি স্কুল থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে রাজাবাড়ী কানাইডাঙ্গা এলাকায়। তিনি এর আগে ওই এলাকার বাসিন্দা এবং তার ভাতিজা এশারুলকে অফিস সহায়ক পদে, তার শ্যালিকা ফারহানা হাবিব লোপা, ভাইয়ের মেয়ের স্বামী (ভাতিজি জামাই) আহসানুল্লাহ এবং সর্বশেষ ছেলের বউ কুসুম খাতুন মৌসুমিকে চাকরি দিয়েছেন।

প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় লোকজনকে চাকরি না দেওয়ায় আমার ওপর তারা হামলার চেষ্টা করেছে। এ ছাড়া তারা নানাভাবে হুমকি প্রদান করছে। তবে আগামী রোববার থেকে আমি স্কুলে যাব। সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে।’

SHARE