সব দিকেই এগিয়ে মেয়েরা

36

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় এবারও পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়ার দিক থেকে এগিয়ে আছেন মেয়েরা। বোর্ডে এবার পাসের হার ৮১ দশমিক ৬০। তবে গেল বছরের তুলনায় এবার সামগ্রিকভাবে পাসের হার কমেছে। গত বছর পাসের হার ছিল ৯৭ দশমিক ২৯ শতাংশ।

এবার মেয়েদের পাসের হার ৮৫ দশমিক ৮৯ আর ছেলেদের ৭৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ। পরীক্ষায় ছেলেদের চেয়ে কম উপস্থিতি সত্ত্বেও মেয়েরা এমন ফলাফল করেছেন। এ ছাড়া ছেলেদের চেয়ে ২ হাজার ৫৯ জন মেয়ে বেশি জিপিএ-৫ পেয়েছেন। ২০১৪ সাল থেকে মেয়েরা ফলাফলে সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন।

সর্বশেষ ২০১৩ সালে জিপিএ-৫ পাওয়ার দিক থেকে মেয়েরা এগিয়ে থাকলেও পাসের হারে খানিকটা পিছিয়ে ছিলেন। সেই বছর ছেলেদের পাসের হার ছিল ৯৪ দশমিক শূন্য ৫। আর মেয়েদের পাসের হার ছিল ৯৩ দশমিক ৭২ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ১০ হাজার ৮৭ জন ছেলে। আর মেয়েরা পেয়েছিলেন ১০ হাজার ৪৩৬ জন। এর পরের বছর থেকে ধারাবাহিকভাবে মেয়েরা সব দিক থেকে এগিয়ে আছেন। এমনকি ২০২০ সালে শতভাগ পাসের বছরেও জিপিএ-৫ পাওয়ার দিক থেকে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে ছিলেন। ওই বছর ১৪ হাজার ৩ জন মেয়ে ও ১২ হাজার ৫৬৫ জন ছেলে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবার বোর্ড থেকে ১ লাখ ২৬ হাজার ৭০০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। এর মধ্যে পাস করেছেন ১ লাখ ৩ হাজার ৩৮৫ শিক্ষার্থী। পাসের হার ৮১ দশমিক ৬০ শতাংশ। এবার ৬৬ হাজার ৯৪৩ ছেলে আর ৫৯ হাজার ৭৫৭ জন মেয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন। এর মধ্যে ছাত্রীদের পাসের হার ৮৫ দশমিক ৮৯ আর ছাত্রদের পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ। মেয়েরা জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১১ হাজার ৯৫৭ জন। আর ছেলেরা পেয়েছেন ৯ হাজার ৮৯৮ জন।

সারা দেশে পরপর চারবার শ্রেষ্ঠ কলেজ নির্বাচিত রাজশাহী কলেজ থেকে এবার শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। কলেজের অধ্যক্ষ মোহা. আব্দুল খালেক বলেন, তাঁর কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা একটু বেশি। পাসের হার যেহেতু শতভাগ, মেয়েরাই বেশি পাস করেছেন।

অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক আরও বলেন, ভেতরে-ভেতরে একটা পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্র মেয়েদের জন্য উপবৃত্তির ব্যবস্থা করছে। বেসরকারি সংস্থাগুলোও মেয়েদের স্বাবলম্বী করতে কাজ করছে। এখন শ্রেণিকক্ষে মেয়েদের উপস্থিতি বেশি থাকছে। তাঁরা ছেলেদের চেয়ে কম আড্ডা দেন। ছেলেদের চেয়ে বাইরে থাকেন কম। তাঁরা ছেলেদের চেয়ে পড়াশোনায় একটু বেশি মনোযোগী। এসব কারণে মেয়েরা পরীক্ষার ফলাফলে এগিয়ে যাচ্ছেন।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকেন বেশি। বেশি পড়েন। ছেলেদের এগিয়ে নিতে হলে তাঁদের শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি বাড়াতে হবে। রাজশাহীতে রাজশাহী কলেজসহ কয়েকটি কলেজ এ উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই।

এদিকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কৃতী শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। অভিনন্দন বার্তায় রাসিক মেয়র বলেন, যেসব শিক্ষার্থী বন্ধুরা ২০২২ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে, আমি তাদের আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এ পরীক্ষায় কৃতিত্বের পরিচয় দিয়ে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক শিক্ষা জীবনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অতিক্রম করেছে। তারা একাডেমিক জীবনের চূড়ান্ত সাফল্য অর্জনের জন্য অভিভাবক, শিক্ষক ও শ্রদ্ধেয়জনদের উপদেশ মতো নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে থেকে কঠোর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে আগামীতে আরও সাফল্য বয়ে আনবে-এটাই প্রত্যাশিত। আমি সব শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।

SHARE