স্টাফ রিপোর্টার: চাঁদাবাজির মামলায় ৭০ বছর বয়সি অবসপ্রাপ্ত এক স্কুলশিক্ষক জেল খেটেছেন। স্কুলশিক্ষক এটিএম তোজাম্মেল হকের জমিতে থাকা নিজের ঘর ভেঙে সেই ঘর ভাঙার আসামি করা হয়েছে। তার জমিও দখল করার অভিযোগ উত্থাপন করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তোজাম্মেল হক বললেন, ‘সাতদিন জেলে ছিলাম। আমি সুষ্ঠ তদন্ত ও দোষীদের বিচার চাই।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিচারের দাবি করেন তিনি। তার বাড়ি রাজশাহীর বাগমারায়। গত ৭ জানুয়ারি তাকে বাগমারার গোপালপুর মোড় থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় আটক করে নিয়ে যায় বাগমারা থানা পুলিশ। এই মামলার বাদি কামরুজ্জামান। পরে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তোজাম্মেল হকসহ তার ছেলে, এক ভাইসহ ৯ জনকে আসামি করে থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়। ওই মামলায় তোজাম্মেল হকের বয়স দেখানো ৫৫ বছর। অথচ জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তোজাম্মেল হকের বয়স ৭০ বছর। তিনি ১৯৫৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে চাপড়া মোহামম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক এটিএম তোজাম্মেল হক লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবা লুৎফর রহমান বাগমারার হাসনিপুর গ্রামের সাবের আলীর নিকট থেকে ৫ শতাংশ জমি কিনে নেন। পরবর্তিতে আমার বাবা লুৎফর রহমান আমাকে সেই জমি দান করেন। এরপর থেকেই জমির খাজনা-খারিজসহ সমস্ত কাগজপত্র আমার নামে রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি ওই জমিটি হঠাৎ করে স্থানীয় গণিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম জমিটি আবুল কাশেম মন্টুর ছেলে মাসুম কবিরের নিকট থেকে কিনে নিয়েছেন বলে ভুয়া দলিল করেন। সেই ভুয়া দলিল মূলে শামসুল পরবর্তিতে কামরুজ্জামান নামের এক ভূমিদস্যুর নিকট বিক্রি করেন। সম্প্রতি তারা দুজনে মিলে ওই জমিটি দখল করতে যান।
তোজাম্মেল হক কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, ওই জমিতে তাঁরই একটি টিনসেডের বাড়ি এবং গাছপালাসহ চারিদিকে প্রাচীর দিয়ে ঘেরাও করা ছিল। সেই বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এনিয়ে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুটি মামলা দায়ের করেন অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক তোজাম্মেল হক। আদালত মামলা দুটি গ্রহণ করে ওই জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করেন। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গত ১ জানুয়ারি বাড়ি-ঘর ভাংচুর এবং গাছাপালা কেটে জমিটি দখল করে নেন। আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। এই বয়সে আমাকে জেল খাটালো পুলিশ। এখনো বাড়িতে গিয়ে আমার আত্মীয়স্বজনকে গ্রেপ্তারের হুমকি দিচ্ছে। আমি এর বিচার চাই।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ওই এলাকার বাসিন্দা ও মসজিদের ইমাম নাসিম উদ্দিন, চান্দেরআড়া মসজিদের ইমাম হাফেজ মাইনুল ইসলাম এলাকার বাসিন্দা হায়দার আলী প্রমুখ। এ ব্যাপারে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। সেই কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত করবে।