স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেনের বগির ভেতরে এক নারীর যাত্রীর দামী মোবাইল ফোন ও নগদ টাকাসহ ভ্যানিটি ছিনতাই হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল পৌনে সাতটার দিকে রাজশাহীর সারদা রেলস্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। ঢাকা থেকে রাতে ছেড়ে আসা পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনটি সারদা স্টেশনে যাত্রা বিরতির পর ছেড়ে যাবার ছিনতাইকারীরা হানাদেয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় এক যাত্রীকে ট্রেনের গার্ড ও ক্লিনাররা বেধড়ক পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার রাতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনটি মঙ্গলবার সকালে রাজশাহীর সারদা স্টেশনে পৌঁছে। সেখানে যাত্রী নামাতে কয়েক মিনিট যাত্রাবিরতি দেওয়া হয়। এসময় ওই ট্রেনের ‘ঘ’ বগিতে বেশকিছু যাত্রী বিনা টিকিটেই ট্রেনে ওঠে পড়ে। এ সময় ট্রেনের যাত্রীদের বেশির ভাগই ঘুমন্ত ছিলেন। ট্রেনটি ছাড়ার প্রাক্কালে ওই বগিতে বসে থাকা কুমকুম নামে ঘুমন্ত এক যাত্রীর হাত থেকে ভ্যানিটি ব্যাগ টান মেরে দৌড়ে পালিয়ে ট্রেন থেকে নেমে পড়ে দুই যুবক। এ সময় ওই নারী চিৎকার শুরু করলে অন্য যাত্রীরা বিষয়টি জানতে পারেন। ট্রেনের ভেতরে ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তারা।
পরে ট্রেনের গার্ড মনির হোসেন রাজ ও অ্যাটেনডেন্ট হাজির হলে যাত্রীরা তাদের ওপর চড়াও হন। এসময় উত্তেজিত যাত্রীরা সন্দেহভাজন একজন ক্লিনারকে ধরে চড়-থাপ্পড়ও মারেন। এ ঘটনার পর ট্রেনটি রাজশাহী স্টেশনে পৌঁছলে গার্ড মনির হোসেন রাজসহ কয়েকজন ক্লিনার ওই বগিতে থাকা যাত্রী শিমুল ইসলামকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন। তাদের সংঘবদ্ধ হামলায় শিমুলের নাক ফেটে রক্তাক্ত হয়ে যায়। এ সময় একজন সাংবাদিক ছবি তুলতে গেলে গার্ড মনির রাজ তার ওপরও চড়াও হন। পরে রেল পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহত শিমুলের অভিযোগ, ‘ট্রেনে ছিনতাইকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত ক্লিনারসহ গার্ড এবং এটেন্ডেন্টরা। তা না হলে এতো লোক কেন হুট করে প্রথম শ্রেণীর বগিতে ওঠার কথা নয়। এর প্রতিবাদ করায় গার্ড মনিরসহ কয়েকজন ক্লিনার আমাকে ধরে পিটিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।’
রাজশাহী রেলওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাহাদৎ হোসেন জানিয়েছেন, মারামারি ঘটনার পরে একজন যাত্রী অভিযোগ করে গেছেন। ওই ট্রেনের ক্লিনার লাল মিয়াও একটি অভিযোগ করেছেন। খতিয়ে দেখে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ‘ট্রেনের ভেতরে ছিনতাইয়ের ঘটনা আমার জানা নেই। তবে মারামারি হয়েছে বলে শুনেছি। স্টেশনের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে’।