দুর্গাপুরে জলাবদ্ধ ৫০০ একর জমি, বিপাকে কৃষক

22

স্টাফ রিপোর্টার: অবাধে পুকুর খননের কারণে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় অন্তত ৫০০ একর জমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এসব জমিতে কোনো চাষাবাদ করতে পারছেন না কৃষক। কয়েক বছর আগেও মাঠের পর মাঠ রবিশস্যসহ বোরোর আবাদ হতো উপজেলায়। কিন্তু পুকুর খননসহ নানা কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় বছরের পর বছর জমিতে ফসল ফলাতে পারছেন না কৃষক। ফসলি জমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে কৃষক দুশ্চিন্তায়। সরকারের তরফ থেকে জলাবদ্ধতা নিরসন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আর্থিক সংকট ও খাদ্যাভাব দেখা দেবে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার আংরার বিল, পদ্মবিল, ফলিয়ার বিল ও পানানগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর শেখ পাড়ার বিলসহ কয়েকটি বিলের প্রায় ৫০০ একর জমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অনাবাদি অবস্থায় পড়ে আছে এসব জমি। কোনো কোনো জমিতে হাঁটু সমান পানি জমে আছে। তেবিলা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আব্দুল কুদ্দুস ও সুমন বলেন, গত ৩/৪ বছর ধরে নিচু প্রকৃতির জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে ফসল ফলাতে পারছেন না তারা।

কৃষকদের অভিযোগ অনেক কৃষক জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে পুকুর খনন করছেন। তাতে মাছ উৎপাদনের পাশাপাশি বিনা খরচে বেশি লাভ দেখছেন। ফসল ফলাতে গিয়ে উৎপাদন খরচ উঠছে না অনেক কৃষকের। স্থানীয় কৃষক সোহাগ ও রুহুল আমিন বলেন, জলাবদ্ধ জমিগুলো ফসল ফলানোর উপযোগী করা না হলে পরিবার পরিজন নিয়ে তাদের না খেয়ে থাকতে হবে।

দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা বলেন, জলাবদ্ধ জমিগুলো পরিদর্শন করা হবে। পানি সহনীয় কিছু ফসল রয়েছে সেগুলো চাষাবাদ করার ব্যাপারে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হবে। তবে কোনো কৃষক সমস্যা নিয়ে আবেদন করলে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, যেসব জমিগুলোতে তিন ফসলের পরিবর্তে এক ফসল হয়, আবার ৬/৭ মাস জলাবদ্ধতা থাকে এসব জমি সংস্কার করে মাছ চাষের উপযোগী করে মাছের উৎপাদন বাড়ানো যেতে পারে। এতে করে মাছ উৎপাদন ৫-১০ ভাগ বেড়ে যাবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল রানা বলেন, এই উপজেলার বেশকিছু বিলে জলাবদ্ধ সমস্যাটা প্রকট হয়ে উঠেছে। এ ধরনের সমস্যা নিয়ে প্রায় দিনই কৃষকরা আসছেন। কিন্তু জমির শ্রেণি পরিবর্তন নিয়ে বিধিনিষেধ থাকায় চাইলেও কৃষকদের তাৎক্ষণিক কোনো পরামর্শ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

SHARE