স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে বছরের প্রথম দিনই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বই আসছে ধীর গতিতে। প্রাথমিক স্তরে এখন পর্যন্ত জেলায় মাত্র ৩০ শতাংশ বই এসেছে। মাধ্যমিক স্তরে গড়ে ৪০ শতাংশ বই এসেছে। তবে এ বছরের বাকি দিনগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ বই চলে আসবে বলে আশা করছেন শিক্ষা কর্মকর্তারা।
শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলায় মাধ্যমিক স্তরে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ৪৫ লাখ ২১ হাজার পাঠ্যবইয়ের চাহিদা রয়েছে। গত বুধবার পর্যন্ত ৩০ শতাংশ বই এসেছিল। মঙ্গলবার পর্যন্ত কোন কোন উপজেলায় ৪০, কোথাও ৫০ শতাংশ বই এসেছে। আর বোয়ালিয়া থানা শিক্ষা কর্মকর্তার অধীনে মহানগরের জন্য বই এসেছে ৬০ শতাংশ।
মহানগরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য বই এনে রাখা হচ্ছে রাজশাহী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে। উপজেলা পর্যায়ের স্কুলগুলোর জন্য উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরে বই পাঠানো হচ্ছে। সেখান থেকে বই পাঠানো হবে স্কুলে স্কুলে। এরপরই বছরের প্রথম দিন থেকে বিতরণের কথা রয়েছে। তবে ধীর গতিতে বই আসার কারণে বছরের প্রথম দিনই সব শিক্ষার্থীর হাতে সব বিষয়ের বই তুলে দেওয়া নিয়ে এবারও শঙ্কা রয়েছে।
জেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলায় নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, কারিগরি ও মাদ্রাসা পর্যায়ে তিন লাখ ৩১ হাজার ১৮০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে স্কুল পর্যায়ে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত দুই লাখ ২৬ হাজার ৪৭০ জন, মাদ্রাসার দাখিল ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ৪০ হাজার ৯৬০ জন, মাদ্রাসার ইবতেদায়ির বিভিন্ন শ্রেণিতে ৪৮ হাজার ৮৭০ জন, কারিগরি স্কুল পর্যায়ে ১৪ হাজার ৪০ জন এবং মাধ্যমিকের ইংরেজি ভার্সনে ৮৪০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এদের জন্য মোট ৪৫ লাখ ২১ হাজার ৪৩টি বইয়ের চাহিদা রয়েছে।
এই বইয়ের মধ্যে ৩৬ লাখ ৭০ হাজার ৯৬০টি প্রয়োজন নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলোর জন্য। এছাড়া মাধ্যমিক মাদ্রাসার জন্য ছয় লাখ ৩২ হাজার ৯৪৫টি, ইবতেদায়ির জন্য তিন লাখ ৫৩ হাজার ২৯০টি, কারিগরি স্কুলের জন্য দুই লাখ ৫২ হাজার ৮৪৮টি এবং মাধ্যমিক স্কুলের ইংরেজি ভার্সনের জন্য ১১ হাজার ২৮০টি বইয়ের প্রয়োজন দেখিয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।
অন্যদিকে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত জেলায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৪৬ হাজার জন। এদের জন্য প্রয়োজন প্রায় ১২ লাখ বই। এ পর্যন্ত কোন শ্রেণির দুই কপি, কোন শ্রেণির এক কপি বা তিন কপি করে বই এসেছে। বই রাখা হচ্ছে শিক্ষা কর্মকর্তাদের দপ্তরে।
রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এ পর্যন্ত গড়ে হয়তো ৩০ শতাংশ বই এসেছে। এ মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত বই আসতে থাকবে। আশা করি নতুন বছরের আগেই বেশিরভাগ বই চলে আসবে। দু’একটা বাকি থাকতে পারে।’
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহা. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘প্রতিবছর ১ জানুয়ারি বই উৎসব হয়। এবারও হবে। সেভাবেই আমাদের প্রস্তুতি আছে। প্রতিদিনই বই আসছে। এখনও সব বই না এলেও সময়মতো সব চলে আসবে। কোন অসুবিধা হবে বলে মনে হয় না।’