রুটি বেচে ওঠে না খড়ির দাম !

65

স্টাফ রির্পোটার : করোনা প্রতিরোধে সরকার-আরোপিত কঠোর বিধি-নিষেধের কয়েকদিনে রাজশাহীর আদালতপাড়ায় লোকসমাগম একেবারেই কম। ফলে রুটি বিক্রি করে সুবিধা করতে পারছেন না মাজেদা বেগম (৪৮)। সারাদিনের বিক্রিতে খড়ির দামও উঠছে না বলে জানান তিনি।

রাজশাহী আদালত চত্বরে প্রায় ৩৫ বছর ধরে কলাইরুটি বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন মাজেদা। জীবিকার তাগিদে লকডাউনের ভেতরে আদালত চত্বরে চুলা জ্বালিয়েছেন তিনি। কিন্তু রুটি খাওয়ার মানুষ নেই।

নগরীর উপকণ্ঠ শ্যামপুকুর বালিয়া এলাকার বাসিন্দা মাজেদা বেগম স্বামীকে হারিয়েছেন বহু আগে। ছেলে আনারুল ইসলাম বিয়ে করে আলাদা সংসার করছেন। ১৭ বছর বয়সী মেয়ে মনিরা খাতুনকে নিয়ে তিনিই চালাচ্ছেন রুটির দোকান।

আদালত চত্বরে কথা হয় অদম্য এই নারীর সঙ্গে। তিনি জানান, প্রায় ৩৫ বছর ধরে তিনি এই এলাকায় রুটি বিক্রি করেন। স্বাভাবকি সময়ে প্রতিদিন অন্তত ২ হাজার টাকা বিক্রি হয় তার।

কিন্তু বিধি-নিষেধের কারণে লোকজন নেই আদালত এলাকায়। এখন দিনে মাত্র ১০০ থেকে ২০০ টাকার রুটি বিক্রি হচ্ছে। তাতে রুটি বানাতে পোড়ানো খড়ির দামও উঠছে না ঠিকমতো। এমন চলতে থাকলে কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে হবে তাদের।

নিষেধাজ্ঞা ভেঙে দোকান খোলার কারণ জানতে চাইলে পাল্টা প্রশ্ন মাজেদা বেগমের- বাড়িতে বসে থাকলে খাবো কী? সংসার চলবে কী করে? পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে দোকান খুলেছেন বলে জানান তিনি।

এদিকে বিধিনিষেধের ভেতরেও বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) রাজশাহীতে বেড়েছে মানুষের কর্মকাণ্ড। প্রায় স্বাভাবিক নগরীর জীবনযাত্রা। খুলতে শুরু করেছে দোকানপাট।

জানতে চাইলে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলাম বলেন, আমরা সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করছি। সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তগিদ দেওয়া হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত রাজশাহী জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৮১৫ জনের। এর মধ্যে ৫ হাজার ৩০৫ জনই রাজশাহী নগরীর বাসিন্দা। বাকি এক হাজার ৫১০ জন জেলার ৯ উপজেলার বাসিন্দা। এ পর্যন্ত রাজশাহী নগরীতে ৩৭ জন এবং জেলার ৯ উপজেলায় ২২ জনের প্রাণ গেছে করোনায়।

SHARE