ডিভোর্সি মেয়েকে স্বাগত জানাতে ব্যান্ডপার্টির আয়োজন বাবার

অনলাইন ডেস্ক : যৌতুকের দাবিতে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়স্বজনদের নির্যাতনের শিকার মেয়ে তালাক নেওয়ার পর সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ধুমধাম করে মেয়েকে ঘরে ফিরিয়ে এনেছেন একজন বাবা। এ লক্ষ্যে রীতিমতো ব্যান্ডপার্টির আয়োজন করেছিলেন তিনি। উত্তরপ্রদেশের কানপুর জেলায় ঘটেছে এই ঘটনা।

ওই ব্যক্তির নাম অনিল কুমার। তিনি ভারতের সরকারি টেলিযোগাযোগ কোম্পানি ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেডে (বিএসএনএল) চাকরি করেন। তার মেয়ে উরভি (৩৬) একজন প্রকৌশলী, রাজধানী নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দরে চাকরি করেন। ২০১৬ সালে এক কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারকে বিয়ে করেন তিনি।

বিয়ের পর স্বামী-শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে নয়াদিল্লিতেই থাকতেন উরভি। এই দম্পতির একটি কন্যাসন্তানও রয়েছে।

এনডিটিভিকে অনিল কুমার বলেন, ‘বিয়ের সময় আমার মেয়েকে যেভাবে ধুমধাম করে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়েছিলাম, এখন আবার সেভাবেই তাকে বরণ করে নিতে চাই। এজন্যই এ আয়োজন। আমরা চাই, উরভি আবার নতুন করে তার জীবন শুরু করুক।’

আরও পড়ুনঃ   ব্রিটিশ রাজার দাতব্য সংস্থায় ‘আড়াই লাখ পাউন্ড’ দেন সায়ান এফ রহমান

‘তাছাড়া আরও একটি উদ্দেশ্য রয়েছে। এই ব্যান্ডপার্টির অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমি সমাজকে বার্তা দিতে চাই যে লোকজন যেন তাদের মেয়েদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়, দাম্পত্য জীবনে অসুখী বা তালাকপ্রাপ্ত মেয়েকে যেন বোঝা মনে না করে।

উরভির সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিল এনডিটিভি। তিনি জানিয়েছেন, টানা আট বছর যৌতুকের দাবিতে তাকে নির্যাতন করেছেন তার স্বামী-শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

‘দাম্পত্য সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু টানা আট বছর ধরে স্বামী-শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়স্বজনদের নির্যাতন, প্রহার, অপমান, খোঁটা সহ্য করেছি। কিন্তু সবকিছুরই সীমা আছে। তারা সেই সীমা অতিক্রম করে গিয়েছিল।’

উরভির মা কুসুমলতা এনডিটিভিকে বলেন, ‘আমি আমার মেয়ে-নাতনির জন্য পথ চেয়ে বসে আছি। তারা আমাদের সঙ্গেই থাকবে।’

আরও পড়ুনঃ   মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ইসরাইলি ইউনিটের ওপর নিষেধাজ্ঞার ইঙ্গিত যুক্তরাষ্ট্রের

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দিল্লির একটি পারিবারিক আদালত উরভির তালাক আবেদন মঞ্জুর করেন। তারপর এতদিন মেয়েকে নিয়ে দিল্লিতেই ছিলেন তিনি। সোমবার কানপুরে বাবার বাড়িতে আসেন।

অনিল কুমারের প্রতিবেশী ইন্দ্রভান সিং এনডিটিভিকে বলেন, ‘আমরা উরভির তালাকের খবর আগেই পেয়েছিলাম; গতকাল বাড়ির সামনে ব্যান্ডপার্টি দেখে ভেবেছিলাম যে সম্ভবত দ্বিতীয়বার উরভির বিয়ে হতে যাচ্ছে।’

‘কিন্তু যখন আমরা জানলাম যে অনিল মেয়ে স্বাগত জানানোর জন্য এই আয়োজন করেছে…রীতিমতো চমৎকৃত হয়েছি। এটা ছিল অসাধারণ অনুভূতি।’

দ্বিতীয়বার বিয়ে করবেন কি না— প্রশ্নের উত্তরে উরভি বলেন, ‘অতীতের তিক্ততা ভুলতে, নিজেকে গুছিয়ে নিতে এখন আমার কিছু সময় প্রয়োজন। তারপর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।’