স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী নগরীর আলহাজ্ব সুজাউদ্দৌলা ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো:আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।অভিযোগের ভিত্তিতে দেখা যায়, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর সাবেক অধ্যক্ষ এ.এস.এম মোস্তাফিজুর রহমান(মাঞ্জাল) ২৫ আগস্টে স্বেচ্ছায় অধ্যক্ষ পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
এরপর অত্র কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণ করেন আলমগীর হোসেন।দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি নানা অনিয়ম করে আসছেন বলে গণস্বাক্ষর করেছেন অত্র কলেজের শিক্ষকগণ।গণস্বাক্ষর করে অভিযোগ পত্রটি পরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চল, রাজশাহী বরাবর জমা দেন এবং বিচারের দাবি জানান।
শিক্ষকগণ ঘোষণা দিয়ে বলেন, আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারী আলহাজ্ব সুজাউদ্দৌলা কলেজ, রাজশাহী এর সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এই মর্মে ঘোষণা করছি যে, উক্ত আলহাজ্ব সুজাউদ্দৌলা কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব মোঃ আলমগীর হোসেন আমাদের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে কোন ধরনের আলোচনা না করেই বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করার অপচেষ্টা করছেন যা আমরা কোনো অবস্থাতেই সমর্থন করি না।
বিগত ২৮ এপ্রিল রোববার তিনি অত্র কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এতে করে আজঅবধি পর্যন্ত কলেজের সেই সংবাদ সম্মেলন কে ঘিরে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মক ভাবে ব্যহত হচ্ছে।
তিনি বিগত ১৩ এপ্রিল কলেজের নিয়মিত এডহক কমিটির সভায় উপস্থিত থেকে চলমান এডহক কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধির একটি রেজুলেশন ও ফরওয়াডিং করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণের সিদ্ধান্ত নেন। অথচ তিনি পরবর্তীতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধির বাইরে গিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি এডহক কমিটি করে নিয়ে আসেন যা সম্পূর্ণ ভাবে বিধি বহির্ভূত।
মোঃ আলমগীর হোসেন কে অবগত করার পরেও তিনি বিগত ১০্মে যে এডহক কমিটির সভা হয় সেখানে ইচ্ছাকৃতভাবে অনুপস্থিত থাকেন এবং কলেজের সব রুমের চাবি নিজের কাছে রাখেন।
বারবার তাকে ফোন করার পরেও পাওয়া যায়নি। এরপর চলমান এডহক কমিটির বর্তমান সভাপতি জনাব পারভেজ রায়হান, পরিচালক (যুগ্ম সচিব) স্থানীয় সরকার বিভাগ, রাজশাহী ও এডহক কমিটির বিদ্যোৎসাহী সদস্য জনাব শেখ মোহাম্মদ কায়েস, শিক্ষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। কলেজের চাবি না পেয়ে কলেজের বাইরেই এডহক কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সভা করে চলে যান। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন উপস্থিত না হওয়ায় এবং কলেজ বন্ধ থাকায় ওনাদের সম্মানহানী হয়েছে বলে আমরা মনে করছি।
গত ২৫আগস্ট অত্র কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ জনাব এ.এস, এম মোস্তাফিজুর রহমান স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন এবং উক্ত দিনই গঠিত গভর্নিং বডির সভায় সভাপতি জনাব পারভেজ রায়হান, পরিচালক (যুগ্ম সচিব) স্থানীয় সরকার বিভাগ, রাজশাহী সহ উপস্থিত সদস্যদের উপস্থিতিতে এ.এস.এম মোস্তাফিজুর রহমানের পদত্যাগ পত্র সর্বসম্মত ভাবে গৃহীত হয়। অথচ মোঃ আলমগীর হোসেন আঞ্চলিক শিক্ষা অফিস, রাজশাহী কর্তৃক ০৬ মে প্রেরিত চিঠির প্রেক্ষিতে তিনি উত্তরে উল্লেখ করেন যে, সাবেক অধ্যক্ষ এ,এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান কে জোরপূর্বক পদত্যাগ করানো হয়েছে যা সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। পাশাপাশি গভর্নিং বডির সভায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের প্রদর্শক মো: ফিরোজ কবির কে সাময়িক বরখাস্ত করার পরেও এবং ১৪ জুলাই থেকে আজ অবদি অনুপস্থিত থাকার পরেও , তার কোন তথ্য পাঠানো হয়নি। যাহা মাউশি কর্তৃক প্রেরিত ৬ মে চিঠির নির্দেশনা অনুযায়ী ভুল তথ্য প্রদান ও তথ্য গোপন করার অপরাধ করেছে। আমাদের ধারণা ভুল তথ্য প্রদান করে আওয়ামী লীগের দোসর সাবেক অধ্যক্ষ এ.এস.এম মোস্তাফিজুর রহমানকে পুনরায় কলেজে নিয়ে আসার অপচেষ্টা করছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন।
এ বিষয়ে আলহাজ্ব সুজাউদৌলা ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো: আলমগীর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি “বলেন, পদত্যাগ চাইলেই তো পদত্যাগ হয় না ফর্মালিটি আছে, ডেকোরাম আছে,ফর্মালিটি অনুযায়ী পদত্যাগ করতে হলে পদত্যাগ করে চলে যাবো।”
এ বিষয়ে পরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চলের, রাজশাহী এর অফিসে সাক্ষাৎকারের জন্য গেলে তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে ফোন দেয়া হলে তিনি বলেন “আমি বাইরে মিটিংয়ে আছি পরে কথা বলব।”