অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের জন্য ওভাল অফিসে প্রবেশের আগেই তার সঙ্গে তর্কে না জড়াতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগে একজন মার্কিন সিনেটরের কাছ থেকে তিনি ওই সতর্ক বার্তা পেয়েছিলেন।
মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তপ্ত বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত না হতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন সাউথ ক্যারোলিনার রিপাবলিকান দলীয় সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম। তিনি জেলেনস্কিকে পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘বৈঠকে তার সঙ্গে বিতর্কে যাবেন না।’’
নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গ্রাহাম বলেছেন, ‘‘আমি বলেছিলাম, নিরাপত্তা চুক্তির বিষয়ে তর্ক করবেন না।’’
কিন্তু বৈঠক শুরু হওয়ার পর ইউক্রেন যুদ্ধের প্রচেষ্টা ও মার্কিন সামরিক সহায়তা ঘিরে দেখা দেওয়া অনিশ্চয়তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন জেলেনস্কি। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের ক্ষেত্রে আরও আক্রমণাত্মক মার্কিন পদক্ষেপ গ্রহণে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তার এই আহ্বানের পর উভয় প্রেসিডেন্টের মাঝে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের সূত্রপাত হয়।
পরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কৃতজ্ঞতা বোধ নেই বলে অভিযোগ করেন। এরপর যা ঘটেছিল তাকে নজিরবিহীন ঘটনাই বলা যায়। কারণ বৈঠকে দুই প্রেসিডেন্টের তীব্র বাগবিতণ্ডা প্রকাশ্যেই চলছিল, সেখানে সাংবাদিকদের সামনে এই ঘটনা ঘটে। পরে আকস্মিকভাবে হোয়াইট হাউস ত্যাগ করেন জেলেনস্কি। এমনকি দুই দেশের মাঝে ইউক্রেনের বিরল খনিজ সম্পদ নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষরের কথা থাকলেও সেটি হয়নি।
মস্কোর সঙ্গে শান্তি চুক্তির বিষয়ে ইউক্রেনের আলোচনা করা উচিত বলে বার বার পরামর্শ দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও ট্রাম্টের এমন অবস্থানে জেলেনস্কি ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের মাঝে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
প্রাথমিকভাবে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে অবস্থান নেওয়া সিনেটর গ্রাহাম সাংবাদিকদের বলেছেন, জেলেনস্কির ‘‘পদত্যাগ’’ এবং ইউক্রেন থেকে এমন কাউকে পাঠানো দরকার, যার সঙ্গে আমরা কাজ করতে অথবা পরিবর্তন ঘটাতে পারি। রিপাবলিকান দলীয় অন্যান্য সিনেটররাও ওই বৈঠকে জেলেনস্কির বাগবিতণ্ডার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্পের প্রতি জেলেনস্কি সম্মান প্রদর্শন করেননি বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
তবে ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য-বিনিময়ের ঘটনায় নিজের অবস্থানে অনড় রয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। পরবর্তীতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি স্বীকার করেছেন যে ট্রাম্পের সঙ্গে বাক্য বিনিময় বেশি উত্তপ্ত হয়ে গেছে। তবে এটার দরকার ছিল বলে জোর দিয়েছেন তিনি।