আলোচিত দেশিয় মদ পানে ৪ জন নিহত ঘটনায় তদন্তে এএসপি হেলেনা

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী মোহনপুরে আলোচিত দেশিয় মদ (কট) পান করে নিহত হয়েছেন মাদক ব্যবসায়ীসহ ৪ জন ব্যক্তি। এঘটনায় রামেক হাসপাতাল থেকে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন আরো ৪ জন মাদক সেবী। ধামাচাপা দিতে নানান চেষ্টা চলমান থাকায় বিষয়টি এখন আলোচনার শীর্ষে।

এদিকে রোববার (১২ জানুয়ারি) সুষ্ট তদন্ত ও ঘটনা উদঘাটনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কথা বলছেন রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেলেনা আকতার। এসময় সঙ্গে ছিলেন মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাননানসহ পুলিশ সদস্যরা।

এলাকাবাসি সূত্রে ও সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রতিনিয়ত আনন্দ উল্লাস করে মোহনপুর উপজেলার করিষা-দূর্গাপুর গ্রামের নির্জন স্থানে অনেকেই মাদক সেবন করে।

এ ঘটনায় নিহতরা টুটুল ও জুয়েলের কাছে বসে এ মদ (কট) সেবন করে। এরপর তারা ধীরে ধীরে অসুস্থ্য হতে শুরু করলে তারা এলাকায় মিথ্যা বয়ান দিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করে। এরা দুইজন ছাড়া আরো মারা যায় মন্তাজ ও একদিল। আর রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরে আসেন পিন্টু, আকবর, মোনা ও ফিরোজ।

আরও পড়ুনঃ   সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর গ্রেফতার

নিহত টুটুলের স্ত্রী শীলা বলেন, আমার স্বামী বাড়িতে এসে বলে তার নানার রকম সমস্যা হচ্ছে। তখন সে এলাকার কয়েকজন পল্লী চিকিৎসকের কাছ থেকে ঔষধ খাওয়ার পর সুস্থ্য না হয়ে মারা যায় আমার স্বামী।

নিহত মন্তাজের স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, আমার স্বামী প্রায় ১৩ বছর যাবৎ মাদক সেবন করে। এবার এই মাদক সেবন করায় আমার স্বামী মারা গেছে। এলাকায় মাদক মুক্ত হলে আর কাউকে আমার মতো স্বামী হারা হতে হবেনা।

এঘটনায় অসুস্থ্য মাদক সেবী আকবর বলে, আমি মাঝে মধ্যে মাদক সেবন করি, সেদিন তারা আমাকে ডেকে সেই মদ (কট) খায়িয়েছে, তাই আমি অসুস্থ্য হয়েছি।

এ ঘটনায় মোহনপুর থানায় এসে অজ্ঞাত মাদক সেবীদের আসামী করে মামলা দায়ের করেন নিহত মন্তাজের ছেলে মাসুম রানা। তিনি বলেন, যে এ মদ (কট) বিক্রি করেছে, সে যেন গ্রেপ্তার হয়। আমি আবার বাবার হত্যা বিচার দাবি জানাচ্ছি।

তবে স্থানীয়দের দাবি, এঘটনার অন্তরালে মাদকের গডফাদার হিসেবে জড়িত রয়েছেন ধোড়সা গ্রামের আব্দুল হাননান নামের একজন মাদক ব্যবসায়ী। এছাড়া এই এলাকায় মাদক ব্যবসার সাথে জড়িয়ে গেছে অনেক যুবক।

আরও পড়ুনঃ   জামিনে বের হয়ে থানার এক কন্সটেবলকে জিম্মি করে টাকা দাবি আসামির

কান্না কন্ঠে এলাকাবাসির অনেকে বলেন, আমাদের আজও হুমকি দেওয়া হয়েছে, যেন জেলা পুলিশের কাছে কিছু না বলি। বললে আমাদের কুপাবে, তাই আমরা এখন অসহায়। আমরা এলাকা মাদক মুক্ত সহ সকল অপরাধীদের বিচার চাই।

এলাকার বাসিন্দা আব্দুল্লাহ্ বলেন, হান্নান এলাকার বড় কট ব্যবসায়ী। তার কাছ থেকে সব জায়গায় এ মদ যায়। এদের মৃত্যুতে হান্নানই প্রকৃত দোর্ষী বলে আমি মনে করি।

রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেলেনা আকতার কৌশলে কিছু ফোন নাম্বার সংগ্রহ করে নিয়ে যান। যেন তিনি পরে সকল সঠিক তথ্য নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে পারেন।

এবিষয়ে রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেলেনা আকতার বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করে আসছি। প্রকাশ্যে ও গোপনে তর্থ্য নিয়ে ঘটনার তদন্ত দ্রুত উৎঘাটন করা হবে। এজন্য মোহনপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা কাজ করবেন, আমি সুপারভাইস হয়ে বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করবো।