লেবাননজুড়ে বিস্ফোরিত পেজার কীভাবে কাজ করে

অনলাইন ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যের দেশ লেবাননে গতকাল মঙ্গলবার একযোগে কয়েক শ পেজার নামক টেলিযোগাযোগ ডিভাইস বিস্ফোরিত হয়েছে। এতে ৯ জনের প্রাণহানি এবং অন্তত ৩ হাজার জন আহত হয়েছেন। লেবাননের নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এই পেজার বিস্ফোরণের পেছনে দায়ী।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লেবানিজ নিরাপত্তাবাহিনীর ওই সূত্র জানিয়েছে, দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ তাইওয়ান থেকে মাস খানেক আগে এই টেলিযোগাযোগ ডিভাইসগুলো আমদানি করেছিল। সূত্রটি আরও জানিয়েছে, সব মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজার পেজার বিস্ফোরিত হয়েছে। এসব ডিভাইসের ভেতরে মোসাদ আগে থেকেই বিস্ফোরক স্থাপন করে রেখেছিল বলেও দাবি করেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ   বাংলাদেশ নিয়ে কংগ্রেসের দৌড়ঝাঁপ, পশ্চিমবঙ্গের গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক

একটি পেজারের অপর একটি নাম হলো—‘বীপার’। এটি মূলত ছোট, সহজে বহনযোগ্য টেলিযোগাযোগ যন্ত্র, যা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি সিগন্যালের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত লিখিত বার্তা, সংখ্যাসূচক বা আলফানিউমেরিক বার্তা আদানপ্রদানে ব্যবহৃত হয়। মুঠোফোন জনপ্রিয় হওয়ার আগে পেজার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো। সে সময় এটি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের হাতিয়ার, বিশেষ করে ডাক্তার, সাংবাদিক, প্রযুক্তিবিদ এবং পরিচালকদের মতো পেশাদারদের কাছে এটি ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল। এটির জন্য আলাদা কোনো নেটওয়ার্ক অবকাঠামোর প্রয়োজন হয় না।

পেজার দিয়ে খুব সহজেই যোগাযোগ করা যায়। তবে এর জন্য ব্যবহারকারীকে অবশ্য কিছুটা দক্ষ হতে হয়। এই যন্ত্রে রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে একটি বার্তা পাঠানো হয়। পরে অপর প্রান্তে থাকা ব্যবহারকারী ডিভাইসটি থেকে আসা একটি স্বতন্ত্র বীপের মাধ্যমে বার্তা গ্রহণ করেন। কিন্তু বার্তায় কী বলা হয়েছে তা জানার জন্য ব্যবহারকারীকে অবশ্যই নিকটস্থ ল্যান্ডফোনে সংযোগের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ   যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরীতে হুতির ড্রোন হামলা

তবে প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে পেজারেরও উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। নতুন মডেলগুলো বেশ ছোট স্ক্রিন আনা হয়েছিল এবং একই সঙ্গে এই ডিভাইস সরাসরি বার্তা ব্যবহারকারীর কাছে তুলে ধরতে পারত। তবে ১৯৯০—এর দশকে মোবাইল ফোন আসার পর এই ছোট ডিভাইসগুলোর প্রয়োজনীয়তা কমে যেতে শুরু করে। গত শতকের শেষ নাগাদ এই ডিভাইসগুলো একপ্রকার হারিয়েই যায়।