স্টাফ রিপোর্টার : নাটোর সদর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের ঘনিষ্ঠ ও সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ঠিকাদার মীর হাবিবুর আলম বোখতিয়ারের বিরুদ্ধে পাথর কেনার নামে ৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগ করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের লিয়ালমারা এলাকার বাসিন্দা ও ‘মেসার্স নয়ন এন্টারপ্রাইজ’-এর স্বত্বাধিকারী মাহিদুর রহমান।
ভুক্তভোগী মাহিদুর রহমান আরএমপি রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় এবং সওজের রাজশাহী জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে অভিযোগ দেওয়ার পরও তিনি এখনও কোনো ধরনের প্রতিকার পাননি বলে দাবি করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আমদানি-রপ্তানিভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘সোনামসজিদ আমদানিকারক গ্রুপ’-এর সদস্য মাহিদুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদার মীর হাবিবুর আলম বোখতিয়ারের কাছে পাথর সরবরাহ করে আসছিলেন। ‘মীর হাবিবুর কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’-এর নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী বোখতিয়ার তার প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল পরিমাণ পাথর কিনলেও এক পর্যায়ে ৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকার মূল্য পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করেন।
মাহিদুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, বারবার টাকা চেয়েও তিনি প্রতারিত হচ্ছেন। বোখতিয়ার বিভিন্ন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করে এবং কোনো টাকা পরিশোধ না করে তাকে হয়রানি করছেন। বিষয়টি নিয়ে গত ২৭ এপ্রিল তিনি রাজপাড়া থানায় ও সওজের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার পাওনা টাকা ফেরত পাননি।
ভুক্তভোগী আরও অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সাবেক এমপি শিমুলের প্রভাব কাজে লাগিয়ে বোখতিয়ার সওজ থেকে শত কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছে রাজশাহী সড়ক বিভাগের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প। বর্তমানে তিনি নাটোর মাদ্রাসা মোড় থেকে সিংড়া পর্যন্ত রাস্তার কাজও করছেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বোখতিয়ার প্রকাশ্যে না থাকলেও তার নিয়োজিত লোকজন এখনও ঠিকাদারি কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে তিনি রাজশাহী সওজ অফিস থেকে কয়েক কোটি টাকার বিলও উত্তোলন করেছেন।
এ প্রসঙ্গে মাহিদুর রহমান বলেন, “মীর হাবিবুর রহমান আমার কাছ থেকে কোটি কোটি টাকার পাথর কিনেছেন। সব কাগজপত্র আমার কাছে আছে। কিন্তু এখন টাকা ফেরত না দিয়ে আমাকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। আমার ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে, পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।”
তিনি আরও বলেন, “একাধিকবার অভিযোগ দেওয়ার পরও আমি কোনো বিচার বা প্রতিকার পাচ্ছি না। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
এ বিষয় আরএমপি রাজপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আশরাফুল আলম বলেন, গত ২৪ এপ্রিল এ বিষয় একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি তদন্ত করছেন এসআই আজাহারুল। সে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করবে।
এবিষয় সওজ রাজশাহী জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন, এনডিসি বলেন, লিখিতো অভিযোগ পেয়েছি। ঠিকাদার মীর হাবিবুরের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি সমাধান করে নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।