অনলাইন ডেস্ক : ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। শনিবার (২৪ মে) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনের মূখপাত্র শরীফ ওসমান হাদী।
তিনি বলেন, ‘আমরা আবারও জাতীয় সরকারের দাবি করছি; যেখানে বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন থেকে শুরু করে সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল শক্তিকে নিয়ে জাতীয় সরকার করতে হবে।
আগামী একটা বছর, এখনো জাতীয় সরকার করার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়নি। এটাতে যদি বিএনপি-জামায়াত বা অন্য কেউ অসহযোগিতা করে, তাহলে তাদেরকে জাতির কাছে জবাবদিহি করতে হবে।’
হাদি বলেন, ‘আগামী একটা বছর জাতীয় সরকারের মাধ্যমে আমরা বিচার, মৌলিক সংস্কার ও জাতীয় নির্বাচন করতে চাই। জাতীয় সরকার না হলে জাতীয় ঐক্য কাউন্সিল করেন; যার প্রধান থাকবেন ড. ইউনূস। প্রতিটি রাজনৈতিক দল থেকে প্রতিনিধি থাকবে, যারা মন্ত্রী বা উপদেষ্টা হবেন না; কিন্তু ওয়াচডগ হিসেবে কাজ করবেন। প্রতিটি বিষয়ে কথা বলতে পারবেন।
এটা যদি করতে না পারেন, অথবা মৌলিক সংস্কার না করে ইউনূস চলে যান বা নির্বাচনের দিকে যান, তাহলে অচিরেই দেশে গৃহযুদ্ধ লাগবে। যার প্রধান দায় রাজনৈতিক দলগুলোকে নিতে হবে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নিতে হবে।’
জুলাই আন্দোলনকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কুক্ষিগত করেছে বলে অভিযোগ করে ইনকিলাব মঞ্চের এ মুখপাত্র বলেন, ‘এনসিপির ভুল তিনটা। এনসিপি জুলাইকে কুক্ষিগত করেছে, তাদের অনেকেই দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এই ঐক্য মূলত নষ্ট করেছে এনসিপি।’
হাদি বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র না হলে জুলাই শহীদ পরিবার কিংবা যারা এই আন্দোলনে শরিক হয়েছে, তাদেরকে ভারত আর আওয়ামী লীগ কচুকাটা করবে। জুলাই ঘোষণাপত্র হলে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
এ সরকারের মধ্যে যারা আওয়ামী লীগকে চায়, তাদের নৈতিক পরাজয় হয়েছে নিষিদ্ধের মাধ্যমে। তাদের চূড়ান্ত পরাজয় হবে জুলাই সনদ তৈরি হলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার ও সেনাবাহিনী এ মুহূর্তে মুখোমুখি অবস্থান করছে। সেনাপ্রধান যে বক্তব্য দিয়েছে সেটি স্পষ্ট একটি রাজনৈতিক বক্তব্য। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অনেক অফিসার আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী।’
সেনাপ্রধানের উদ্দেশে তিনি বলেন, বর্তমান সেনাপ্রধান আপনি এভাবে রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে পারেন না। সম্ভবত আমাদের সেনাবাহিনী একটি ইন্সটিটিউশনালি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যে দলই আগামীতে ক্ষমতায় আসবে তাদেরকে সেনাবাহিনীকে বলে আসতে হবে।’
এদিন শরীফ ওসমান বলেন, এই সরকারের মধ্যে কেউ কেউ ৫ বছর ক্ষমতায় থাকতে চান। এইটায় এই সরকারের বড় দায়। ড. ইউনূসের পরিচয় ব্যবহার করে তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়। এই সরকারৈর মধ্যে ইতোমধ্যেই অনেকে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কেন জুলাইয়ের রাজনীতি করলেন না? আমরা এনসিপিকে পরে ধরব। আপনারা বলুন যে জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে, না হয় ঢাকা শহর অচল করে দিতে হবে।’