‘নারীবিষয়ক সংস্কার প্রতিবেদনে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি’

অনলাইন ডেস্ক : নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি ও মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছে রামপুরা ও হাতিরঝিল থানা ইমাম-খতিব-উলামা পরিষদ। কমিশনের প্রতিবেদনে প্রস্তাবিত কোরআনবিরোধী সুপারিশগুলো বাতিলসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

শুক্রবার (২৩ মে) জুমার নামাজ শেষে রাজধানীর রামপুরায় নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের কোরআনবিরোধী প্রস্তাব বাতিলের দাবিতে আয়োজিত এক মানববন্ধন এসব দাবি জানানো হয়। কোরআনপ্রেমী তাওহীদি জনতা ও রামপুরা-হাতিরঝিল থানা ইমাম-খতিব-উলামা পরিষদের ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নূর মসজিদের খতিব মাওলানা খুরশীদ আলম কাসেমী।

সমাবেশ থেকে জানানো অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে নির্বাচিত শীর্ষ মুফতিদের মাধ্যমে সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো যাচাই-বাছাই করা; সর্বক্ষেত্রে নারীর জানমাল, সম্মান ও সম্ভ্রমের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; যৌনকর্মী, ছিন্নমূল, বিধবা, অসহায় ও এতিম কন্যাসন্তানের সম্মানজনক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি বিধবা ও অসহায় বয়স্ক নারীদের যৌক্তিক আর্থিক ভাতা প্রদান; গুম-খুন, ধর্ষণ ও শিশু ধর্ষণের মতো পৈশাচিক অন্যায়ের প্রতিকারে শরিয়াভিত্তিক বিচারব্যবস্থা চালু এবং যৌতুক, উত্ত্যক্তকরণসহ যৌন হয়রানিমূলক অপরাধের শাস্তি দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকর করা।

আরও পড়ুনঃ   সহিংসতায় নিহতদের স্মরণে আ.লীগের দোয়া কর্মসূচি আজ

মানববন্ধনে রামপুরা নূর মসজিদের ইমাম মাওলানা এনায়েত কবির বলেন, নারী সংস্কার কমিশনে বিভিন্ন ধর্মের পণ্ডিত ব্যক্তিদের জায়গা দেওয়া যেত। কিন্তু এখানে অন্য কোনো ধর্মের প্রতিনিধিদেরও রাখা হয়নি। অথচ এটাকে সর্বজনীন আইন হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

মাওলানা এনায়েত কবির বলেন, ‘আমরা বারবার শুনি নারী-পুরুষের সমান অধিকার। কোরআনে বাবার সম্পত্তিতে ছেলে মেয়ের দ্বিগুণ পায়। এই ধারাকে বিলুপ্তের দাবি প্রতিবেদনে করা হয়েছে। অথচ নারীকে যতটুকু সম্পত্তির ভাগ দেওয়া হয়েছে, ততটুকু বাস্তবায়নের প্রশ্ন, দাবি তারা তোলেন না।’

আরও পড়ুনঃ   গাজীপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মাওলানা এনায়েত কবির বলেন, এই সমাজ একটা মূল্যবোধ ও ঐতিহ্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত। প্রতিবেদনে যৌনপেশাকে শ্রমের মর্যাদা দেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে। অথচ তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার দাবি নারী সংস্কার কমিশনে তোলা হয়নি। তিনি বলেন, শুধু ইসলাম ধর্মেই নয়, পৃথিবীর কোনো ধর্মই যৌনপেশাকে সমর্থন করে না।

মানববন্ধনে ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের ঢাকা মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক এফ এম এ হায়দার বলেন, ‘স্বৈরাচার হাসিনার পতনের জন্য ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমেছিল। এই বেহায়াপনা বাস্তবায়ন করার জন্য রক্ত দেওয়া হয়নি। এ দেশে কোনো কোরআনবিরোধী আইন বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না।-ইত্তেফাক