রাকসুর নির্বাচনের তফসিল ও পূর্ণাঙ্গ আবাসিকতার দাবিতে ছাত্রসমাবেশ

রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের তফসিল ও পূর্ণাঙ্গ আবাসিকতার রোডম্যাপের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্রসমাবেশ হয়েছে। সোমবার (১৯ মে) দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ‘আরইউ স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স’-এর ব্যানারে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা।

সমাবেশে ছাত্রনেতারা বলেন, অবিলম্বে রাকসু নির্বাচনের খসড়া ভোটার তালিকা, নির্বাচনী আচরণবিধি ও পূর্ণাঙ্গ তফসিল ঘোষণা করতে হবে। দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা রাকসু নির্বাচনের কার্যক্রমে গতি আনতে হবে এবং বাস্তবায়নের জন্য নির্দিষ্ট সময়সূচি প্রকাশ করতে হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীকে শতভাগ আবাসিকতার আওতায় আনতে হবে। আবাসিক-সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি সময়োপযোগী ও বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ প্রকাশ করতে হবে।

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজিব বলেন, ‘আমাদের এই ছাত্রসমাবেশের অন্যতম দাবি হলো—রাকসুর খসড়া ভোটার তালিকা ও আচরণবিধি অবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে। আমরা যে শতভাগ আবাসনের কথা বলছি, তার একটি পূর্ণাঙ্গ রোডম্যাপ আমরা চাই। যত দিন পর্যন্ত না শতভাগ আবাসন নিশ্চিত হচ্ছে, তত দিন অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবাসন ভাতা দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাকসু ও আবাসিকতা ইস্যুতে প্রশাসন, শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে যে সচেতনতা ও কার্যক্রম থাকা উচিত ছিল, তা হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীরা লেজুড়বদ্ধ রাজনীতি থেকে মুক্তি চায়। আর তার একটি কার্যকর সমাধান দিতে পারে একমাত্র রাকসু। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনকে অতি দ্রুত একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।’

আরও পড়ুনঃ   নগরীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ৩৭

সোচ্চার স্টুডেন্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি এস এম সালমান সাব্বির বলেন, ‘আমাদের অন্যতম দাবি হলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ আবাসিকব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। যত দিন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ আবাসিক সুবিধা নিশ্চিত না হবে, তত দিন পর্যন্ত যেসব শিক্ষার্থী মেস বা ভাড়া বাসায় থাকতে বাধ্য হচ্ছে, তাদের যথাযথ আবাসিক ভাতা দিতে হবে।’

আরও পড়ুনঃ   নাটোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গণহত্যা দিবস পালিত

সালমান সাব্বির আরও বলেন, ‘১৯৮৯ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত রাকসু নির্বাচন আর অনুষ্ঠিত হয়নি। উপাচার্য দায়িত্ব নিয়ে বলেছিলেন, ৫ মাসের মধ্যে রাকসু বাস্তবায়ন করবেন। কিন্তু ৫ মাস পার হয়ে গেলেও এখনো সঠিকভাবে কোনো রোডম্যাপ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। দ্রুত রাকসুর ভোটার তালিকা প্রস্তুত করতে হবে এবং পূর্ণাঙ্গ তফসিল ঘোষণা করে রাকসু নির্বাচন বাস্তবায়ন করতে হবে।’

কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে আইন বিভাগের শিক্ষক মোরশেদুল ইসলাম পিটার বলেন, ‘প্রশাসন তথাকথিত অপ্রচলিত প্রথা অনুসরণ করে রাষ্ট্র পরিচালনা করছিল। সেই প্রেক্ষাপটে, আমরা চাই একটি আস্থাশীল, ন্যায়ভিত্তিক, সত্যনিষ্ঠ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে এবং সে অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালিত হোক—এটাই আমাদের লক্ষ্য।’

কর্মসূচিটি সঞ্চালনা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক মাহাইর ইসলাম। এ ছাড়া কর্মসূচিতে সাবেক সমন্বয়ক, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।