রাবিতে ছাত্রদলের প্রতিবাদ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি

রাবি প্রতিনিধি : রেজিস্ট্রারের বাসভবনে ককটেল হামলা, আবাসিক হলে কুরআন পোড়ানো এবং একাডেমিক ভবনে পূজার ব্যানার ছেঁড়াসহ সকল ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। রোববার (৪ মে) দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বর সংলগ্ন ছাত্রদলের দলীয় টেন্টে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

সম্প্রতি ক্যাম্পাসে একের পর এক ন্যাক্কারজনক ঘটনার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে বলে দাবি ছাত্রদলের। এ সময় তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ফ্যাসিস্ট হাসিনার নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের হামলাকারী চিহ্নিত, জুলাই-আগস্টে গণহত্যায় মদদদাতা শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।

রাবি ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশে ধর্ম ব্যবসায়ী গোষ্ঠী বিগত ৯ এবং ১১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সুপরিকল্পিতভাবে ৭টি হলে এবং কেন্দ্রীয় মসজিদে কুরআন পোড়ায় যা বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত আছে।

আরও পড়ুনঃ   দেশ ও জাতির সুখ-সমৃদ্ধি কামনায় রাজশাহীতে বড়দিন উদযাপন

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই ঘটনার সঙ্গে যে জড়িত নয় এইটা প্রমাণের জন্য হলেও এই ঘৃণ্য কাজের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের পরিচয় প্রকাশ করা উচিত। তবে শিক্ষার্থীদের কাছে পরিষ্কার হয়েছে এই বিষয়টি একটি উগ্র ধর্ম ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে হয়েছে এবং এই উগ্রবাদী গোষ্ঠী জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ইফতেখারুল আলম মাসউদ স্যারের বাসায় ককটেল হামলায় জড়িত। আজ না হয় কাল এদের পরিচয় প্রকাশ হবেই ইনশাআল্লাহ।

রাবি ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সর্দার জহিরুল বলেন, ছাত্রদল সব সময় সত্য ও সংগ্রামের পক্ষে রয়েছে। রাবি ছাত্রদল সব সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভাবে। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে কার কেমন ভূমিকা ছিল, তা আমরা জানি। এখন সবাই আসছে ক্রেডিট নিতে। ভিসি স্যারকে বলবো, আসুন আমরা একসঙ্গে মিলেমিশে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ঠিক রাখি।

রাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর নির্যাতনের শিকার হয়েও সাধারণ মানুষের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বুকের রক্ত দিয়ে সংগ্রাম করেছি। আমাদের নেতাকর্মীদের রক্তের ওপরে আজকের বাংলাদেশ টিকে রয়েছে, আজকের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় টিকে রয়েছে। আমরা অপশক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজির রাজনীতি থেকে মুক্তি চেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা গতকাল দেখলাম টাকার শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বহিরাগতদের নিয়ে এসে রাবি উপাচার্যকে আটকে রেখে তাদের অযৌক্তিক দাবি আদায় করা হলো।

আরও পড়ুনঃ   তানোরে নানা কর্মসুচীর মধ্য দিয়ে তারুণ্যের উৎসব উদযাপন

তিনি আরও বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে থাকে, কখন না জানি সেই বর্বর হামলাকারীরা তাদের রগ কাটে, কখন তাদের পিটিয়ে হত্যা করে। আমাদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের শরীরে এক বিন্দু পরিমাণ রক্ত থাকাকালীন কোনো সাধারণ শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে তা কখনোই হবে না।

অবস্থান কর্মসূচি শেষে একটি বিক্ষোভ বের করা হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে জোহা চত্বরে এসে শেষ হয়। অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল শাখার নেতারা, রাজশাহী মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দসহ, রাবি ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।