শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরিটা বুঝিয়ে দিন : বিভাগীয় কমিশনার

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ বলেছেন, মালিকপক্ষ ব্যাংক থেকে ঋণ এনে বিনিয়োগ করবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু সিঙ্গাপুর পালিয়ে গেলে কেউ মেনে নেবে না। আপনারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করুন, লাভ করুন কিন্তু শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরিটা বুঝিয়ে দিন।

মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে আজ (১ মে) সকালে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসন, বিভাগীয় শ্রম দপ্তর, শিল্প সম্পর্ক শিক্ষায়তন এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর যৌথভাবে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

আজিম আহমেদ বলেন, ঘাম শুকানোর আগে ন্যায্য মূল্য পরিশোধ করার কথা আমরা জেনেছি কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে মালিকপক্ষ শ্রমিক ভাইদের সব সময় পারিশ্রমিক দেয় না বা দিতে পারে না, কোথাও যেন একটা দূরত্ব রয়েছে। শ্রমিক-মালিক সবাইকে নিয়েই আমাদের কার্যক্রম। সুতরাং সবারই দায়িত্ব রয়েছে। মালিকের পাশাপাশি সরকার ও শ্রমিক ভাইদেরও দায়িত্ব রয়েছে। শ্রমের সাথে শক্তিশালী ও বিশ্বস্ত হওয়া প্রয়োজন।

আরও পড়ুনঃ   বিসিএসআইআর ল্যাবরেটরী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকের অবসরজনিত বিদায় সংবর্ধনা

বিভাগীয় কমিশনার আরও বলেন, রাজশাহীতে বেশিরভাগই কৃষি শ্রমিক, এছাড়া নির্মাণ ও পরিবহন শ্রমিকও রয়েছে। মূলত নির্মাণ ও পরিবহন শ্রমিকদের নিরাপত্তাজনিত সমস্যা রয়েছে। পরিবহনে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে যা তার পরিবারের জন্য একটা বড় সমস্যা। কৃষিতে দুর্ঘটনা না ঘটলেও তীব্র গরমে শ্রমিক ভাইদের প্রচুর কষ্ট হয়।

সিলেটের চা শ্রমিকদের জীবনযাত্রার নিম্নমানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদেরকে এখনও ২০০ টাকার কম মজুরি দেওয়া হয়। যদিও মালিকপক্ষ বলে আবাসন, চিকিৎসা ও রেশন দিচ্ছি তবুও সব মিলিয়ে এটা মানসম্মত নয়।

সকলের জন্য পেনশনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা যদি সামাজিকভাবে সার্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করতে চাই তাহলে আপনাদেরকে কিছু টাকা জমা দিতে হবে বাকিটা সরকার দিবে। সার্বজনীন পেনশন স্কিমের ব্যবস্থাপনা ভালো হলে এই উদ্যোগটা সকলের জন্য উপকার বয়ে আনবে। এসময় তিনি শিশু শ্রম বন্ধের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

আরও পড়ুনঃ   রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমি মালিকদের চেক বিতরণ শুরু

জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আরএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার নাজমূল হাসান।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের পরিচালক মো. মনিরুল আলম, জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের যুগ্ম মহাপরিদর্শক মো. বুলবুল আহম্মেদ, মালিকপক্ষের প্রতিনিধি মো. সাদরুল ইসলাম, শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি মো. রোকনুজ্জামান আলম, মো. আব্দুস সামাদ, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নানা পেশার শ্রমিকবৃন্দ।

দিবসটির শুরুতে বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে মে দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের পরিচালক মো. মনিরুল আলম। পরে সেখান থেকে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে তেরখাদিয়াস্থ জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এসে শেষ হয়।