মাহাবুবুর রহমান মনি, বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারার ভবানীগঞ্জ ফাযিল মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জিল্লুর রহমানের নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভাঙচুর ও পরিবারকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেওয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।পরিবারের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করা হয়। পরিবার নিজেদের নিরাপত্তারও দাবি জানান।
আজ বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল লিখিত বক্তব্যে অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের স্ত্রী শামীমার রহমান বলেন, আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আমাদের পরিবারের পক্ষে গভীর উদ্বেগ ও প্রতিবাদ জানাতে এসেছি। আমাদের পৈত্রিক জমিতে গুরুত্বপূর্ণ জনকল্যাণমূলক উদ্যোগ—একটি পাবলিক লাইব্রেরি নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছিল। যার উদ্দেশ্য ছিল এলাকাবাসীর জন্য একটি জ্ঞানচর্চার স্থানের ব্যবস্থা করা। মুঠোফোন, মাদকাসক্ত ও বখাটেপনায় আসক্তদের বইমুখী করা। তবে স্থানীয় কয়েকজন দুষ্কৃতকারী, চাঁদাবাজ পরিকল্পিতভাবে এই মহৎ উদ্যোগে বাধা প্রদান করেছে এবং লাইব্রেরির নির্মাণসামগ্রী ভাঙচুর করেছেন।
গত ২৫ মার্চ সকালে বাগমারার বাসুপাড়া ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের মোড় সংলগ্ন স্থানে লাইব্রেরি নির্মাণকাজ শুরু করেন। টিন, বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী ভাবে এই কাজ শুরু করা হয়। কাজের শুরুতে গোপালপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুল হোসেনের নির্দেশে একদল দুষ্কৃতকারী আমাদের দখলকৃত জমিতে জোরপূর্বক প্রবেশ করে এবং নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়। এর আগে প্রধান আসামি ছাড়া অন্য তিন আসামি মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন। এতে অস্বীকৃতি জানালে কাজে বাধা ও ভাঙচুর করা হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা স্থানীয় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করি। পরে আইনগত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত ২১ এপ্রিল রাজশাহীর জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে মামলাটি করেছেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তদন্ত করে বাগমারা থানার ওসিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
সম্মেলনে বলেন, আমরা আইন ও প্রশাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার কারণে ঘটনার শুরুর দিকেই বাগমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত আবেদন করেছি। আদালতে মামলা দায়েরের পরেও আসামিরা প্রকাশ্যে হত্যা ও বাড়িঘর পোড়ানোর হুমকিসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চলেছেন।
অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জিল্লুর রহমানের ছেলে পর্তুগাল প্রবাসী লিসবন বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারি গবেষক ও পিএইচডি ফেলো জহুরুল ইসলাম মুন জানান, বাবার স্বপ্ন পূরণে স্থায়ী ভাবে সেখানে পাবলিক গ্রন্থাগার নির্মাণে আর্থিক সহায়তা দিতে চেয়েছিলেন। পাকাঘর নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। তবে এমন কাজে বাধা প্রদানে তিনি বিস্মিত বলে জানান।
বাগমারা থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম জানান, আদালতে দায়ের করা মামলার কপি পাওয়া যায়নি, পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামলার প্রধান আসামি আবুল হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, জিল্লুর রহমান গোপালপুর মাদ্রাসার জমিতেই গ্রন্থাগার স্থাপনের উদ্যোগ নিলে স্থানীয় লোকজন বাধা দিয়েছেন।