অনলাইন ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় আরও আটজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি সত্ত্বেও ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিনই গাজায় হামলা চালাচ্ছে এবং সম্প্রতি এসব হামলা আরও জোরদার হয়েছে। এসব হামলায় ঘটছে হতাহতের ঘটনাও। বুধবার (১২ মার্চ) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজায় ইসরায়েলের হামলা জোরদার হয়েছে এবং এতে এক শিশুসহ অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া জাতিসংঘ এবং অন্যান্য ত্রাণ গোষ্ঠী গাজায় প্রবেশকারী সমস্ত ত্রাণের ওপর ইসরায়েলি অবরোধ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে।
অন্যদিকে মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ এবং ইসরায়েলের প্রতিনিধিরা গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে কাতারের রাজধানী দোহায় পৌঁছানোর সাথে সাথে হামাস “নতুন দফায় আলোচনা” শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে।
পৃথক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা আনাদোলু বলছে, মঙ্গলবার গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নতুন হামলায় কমপক্ষে সাতজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। গাজা শহরের পূর্বে বেসামরিক লোকজনের ভিড়কে লক্ষ্য করে চালানো ইসরায়েলি বিমান হামলায় পাঁচজন নিহত এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে চিকিৎসকরা আনাদোলুকে জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, গাজা শহরের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তের কাছে নেটজারিম এলাকায় একদল ফিলিস্তিনি একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ির কাছে জড়ো হওয়ার পর একটি ইসরায়েলি ড্রোন তাদের ওপর হামলা চালায়।
এছাড়া দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরের পূর্বে অবস্থিত শোকা গ্রামে আরেকটি ড্রোন হামলায় একজন ফিলিস্তিনি নারীও নিহত হয়েছেন বলে একটি মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চলে অবস্থানরত ইসরায়েলি সেনাবাহিনীও ওই এলাকার ফিলিস্তিনি বাড়িগুলোতে গুলিবর্ষণ করেছে।
ফিলিস্তিনি মেডিকেল সূত্র এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা আনাদোলুকে জানিয়েছে, সীমান্তে অবস্থানরত সেনারা মধ্য গাজার দক্ষিণ-পূর্ব দেইর আল-বালাহের একটি অঞ্চলে সরাসরি গুলি চালালে একটি শিশু গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। শিশুটি প্রথমে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয় এবং পরে শিশুটির মৃত্যু হয়। আহতদের সম্পর্কে এখনও কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তিন-পর্যায়ের এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে বন্দি বিনিময় এবং স্থায়ী শান্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে।
মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছিল।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।