স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জের : ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে হয় হাবিবা খাতুন (২৫) ও পিয়ারুল ইসলামের। এরপর স্বামীর নানারকম অত্যাচার ও শারিরীক নির্যাতনের কারনে বনিবনা না হওয়ায় হাবিবার পরিবার বিয়ের এক বছর পর বিবাহ বিচ্ছেদ করিয়ে নেয়। এরপর আবারো পারিবারিকভাবে বিয়ে অন্য জায়গায় বিয়ে হয় হাবিবার। সাত বছরের সংসারে বর্তমানে দুই সন্তানের জননী হাবিবা। কিন্তু বিবাহ বিচ্ছেদের ৭ বছর পর হঠাৎ করেই মধ্যরাতে হাবিবাকে হত্যাচেষ্টা করে সাবেক স্বামী পিয়ারুল ইসলাম। এসময় স্থানীয় ধরালো অস্ত্রসহ তাকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। গত সোমবার (১০ মার্চ) দিবাগত মধ্যরাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার দেবিনগর ইউনিয়নের হড়মাঘাট বানু মন্ডলের টোলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাতে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন, দেবিনগর ইউনিয়নের হড়মাঘাট বানু মন্ডলের টোলা গ্রামের মো. এলাহীর স্ত্রী গৃহবধূ হাবিবা খাতুন। মামলায় একমাত্র আসামী করা হয়েছে একই ইউনিয়নের হড়মা পশ্চিমপাড়া গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে পিয়ারুল ইসলামকে। স্থানীয় বাসিন্দা, প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগী গৃহবধূ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ১১টার দিকে কয়েল আনতে যায় হাবিবার স্বামী মো. এলাহী। এই সুযোগে হাবিবার ঘরে প্রবেশ করে সাবেক স্বামী পিয়ারুল ইসলাম। দুই সন্তন নিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা হাবিবার মুখ চেঁপে ধরে গলায় ছুরি ধরে পিয়ারুল। এসময় চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসে। পালানোর চেষ্টা করলে তাকে আটক করে স্থানীয় জনতা। পরে পুলিশ ছুরিসহ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। মামলার বাদি হাবিবা খাতুন বলেন, তার সাথে ৭ বছর আগেই সবার সম্মতিতে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। কিন্তু এরপরেও রাস্তাঘাটে আমাকে নানাভাবে বিরক্ত ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতো। প্রতিবাদ করলেই নানারকম ভয়ভীতি ও হুমকি দিতো। হঠাৎ করে আমার স্বামী কয়েল আনতে গেলে ঘরে প্রবেশ করে গলায় ছুরি ধরে হত্যার চেষ্টা করে। পরে আমার চিৎকারে লোকজন আসলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে স্থানীয় জনতা তাকে আটক করে। এ ঘটনার পর থেকে গলায় ছুরি ধরার ঘটনা মনে পড়লেই এখনও অনেক আতঙ্কে আছি। ভয়ের মধ্যে দিন পার করছি। ন্যায়বিচারের দাবিতে মামলা দায়ের করেছি। প্রত্যক্ষদর্শী তরিকুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করে চিৎকার শুনে আমরা ছুটে এসে দেখি পালিয়ে যাচ্ছে পিয়ারুল ইসলাম। এসময় তাকে আটকে রেখে পুলিশকে আমরা খবর দেয়। পরে পুলিশ ছুরিসহ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মতিউর রহমান বলেন, স্থানীয়রা আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। পরে ছুরিসহ তাকে আটক করে থানায় নেয়া হয়। মঙ্গলবার রাতে ভুক্তভোগী নারী মামলা দায়ের করেছেন৷ এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান ওসি।
ডিভোর্সের ৭ বছর পর মধ্যরাতে গৃহবধূকে হত্যাচেষ্টা
