রোজা না রেখে প্রকাশ্যে খাওয়া-দাওয়া, নাইজেরিয়ায় আটক বহু মুসলিম

অনলাইন ডেস্ক : বছর ঘুরে আবারও শুরু হয়েছে রহমত, মাগফেরাত আর নাজাতের মাস মাহে রমজান। রোজা ইসলামের মৌলিক ইবাদতের মধ্যে অন্যতম এবং এই কারণে সারা বিশ্বের মুসলিমরা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে রোজা পালন করে থাকেন।

এমন অবস্থায় পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় পবিত্র রমজান মাসে রোজা না রাখা মুসলমানদের গ্রেপ্তার করছে দেশটির ইসলামিক পুলিশ। মূলত আফ্রিকার এই দেশটির কানো প্রদেশে রোজার মাসে দিনের বেলা জনসমক্ষে খাবার খেতে দেখার পর তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এছাড়া খাবার বিক্রির দায়েও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার (৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পবিত্র রমজান মাসে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোজা রাখার কথা থাকলেও যেসব মুসলমানকে প্রকাশ্যে খাবার খেতে ও পানীয় পান করতে দেখা গেছে এবং সেইসাথে যারা রমজানের শুরুতে খাবার বিক্রি করছে তাদের গ্রেপ্তার করেছে উত্তর নাইজেরিয়ার কানো প্রদেশের ইসলামিক পুলিশ।

আরও পড়ুনঃ   লেবাননে অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ৩০

হিসবাহের ডেপুটি কমান্ডার মুজাহিদ আমিনুদিন বিবিসিকে বলেছেন, রোজা না রাখার জন্য ২০ জনকে এবং খাবার বিক্রির জন্য আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং শনিবার থেকে শুরু হওয়া এই অভিযান পুরো মাস জুড়ে চলবে।

তিনি বলেন, “এটি গুরুত্বপূর্ণ যে— আমরা অমুসলিমদের বিষয়ে এই ধরনের কোনও চিন্তা করছি না। রমজানের প্রতি কোনও ‘অসম্মান’ ক্ষমা করা হবে না।”

তিনি বলেন, “এমন একটি পবিত্র মাসে রোজা রাখার কথা থাকলেও প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানদের প্রকাশ্যে খাওয়া-দাওয়া করতে দেখা যাওয়াটা হৃদয়বিদারক। আমরা এমন কাজ ক্ষমা করব না এবং সে কারণেই আমরা (অভিযুক্তদের) গ্রেপ্তার করতে বাইরে বেরিয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত ২৫ জনকে শরিয়াহ আদালতে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে।

হিসবাহের এই কর্মকর্তা বলেছেন, রোজার সময়ে লোকেদের যখন প্রকাশ্যে খেতে দেখা যায় তখন মাঝে মাঝে আমরা এই বিষয়ে গোপন তথ্য পাই। তার ভাষায়, “আমাদের কাছে এমন লোকদের কাছ থেকে ফোন আসে যারা জনসমক্ষে লোকেদের খাওয়া দেখে ক্ষুব্ধ হয় এবং আমরা গ্রেপ্তারের জন্য সেই এলাকায় দ্রুত ছুটে যাই।”

আরও পড়ুনঃ   দেশে ফিরতে প্রধান উপদেষ্টাকে খোলা চিঠি তাসলিমার

এমনকি “অনুপযুক্তভাবে চুল কাটা” এবং হাঁটুর ওপরে শর্টস পরতে দেখা যাওয়া ব্যক্তিদেরও গ্রেপ্তারের বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন হিসবাহের ডেপুটি কমান্ডার মুজাহিদ আমিনুদিন।

এর আগে গত বছরও রোজা না রাখার জন্য মুসলিমদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে গ্রেপ্তারকৃতদের রোজা রাখার প্রতিশ্রুতি আদায় করে মুক্তি দেওয়া হয়। এমনকি তাদের কয়েকজনের আত্মীয় বা অভিভাবকদের ডেকে তাদের রোজা রাখার বিষয়ে নজরদারি করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল।

তবে এই বছর গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মুখোমুখি হতে হবে। মাত্র দুই দশক আগে নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলের ১২টি প্রদেশে ধর্মনিরপেক্ষ আইনের পাশাপাশি শরিয়াহ বা ইসলামী আইন কার্যকর করা হয় যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে।

তবে এই প্রদেশগুলোতে বসবাসকারী খ্রিস্টান সংখ্যালঘুদের জন্য শরিয়াহ আইন প্রযোজ্য নয়।