স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীসহ দুইজনের যাবজ্জীবন

ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরে আকলিমা বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার দায়ে স্বামীসহ দুইজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাদেরকে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ফরিদপুরের বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ রায় দেন।

গৃহবধূ আকলিমা ফরিদপুর সদরের চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের জমাদ্দারডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা আবদুল ওহাবের মেয়ে। এটি ছিল তার দ্বিতীয় বিয়ে। আগের স্বামীর সংসারে ১২ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে তার।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- গৃহবধূ আকলিমার দ্বিতীয় স্বামী সালাম বিশ্বাস (৪১) ও সালামের সহযোগী মো. আনিছুর রহমান (৩২)। তারা দুজনই রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার খামারবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা।

আরও পড়ুনঃ   অংশীজনের সঙ্গে পরামর্শের ভিত্তিতে গঠিত হবে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন : তথ্য উপদেষ্টা

রায় ঘোষণার সময় সালাম বিশ্বাস আদালতে হাজির ছিলেন। পরে তাকে পুলিশ প্রহরায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আনিছুর রহমান আদালতে হাজির না থাকায় তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গৃহবধূ আকলিমা ২০১১ সালে ফরিদপুর সদরের বাঘের টিলা গ্রামে এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেন। ওই ঘরে তাদের ১২ বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তবে বনিবনা না হওয়ায় ২০১৫ সালে তাদের বিয়ে ভেঙে যায়। এরপর ওই সন্তানটি নানা বাড়িতে বড় হচ্ছিল। ২০১৫ সালের শেষের দিকে বাড়ির কাউকে কিছু না জানিয়ে গোপনে রাজবাড়ীর সালাম বিশ্বাসকে বিয়ে করেন আকলিমা। বিয়ের পর থেকে স্বামীকে নিয়ে ফরিদপুর শহরের আলিপুর মহল্লায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। তবে এই ঘরে তার কোনো সন্তান ছিল না। ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে তাকে হত্যা করা হয়। এক সহযোগীকে নিয়ে নিজেই স্ত্রীকে হত্যা করেন বলে আদালতে জানান স্বামী সালাম বিশ্বাস।

আরও পড়ুনঃ   ১০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে চোখ দেখালেন প্রধানমন্ত্রী

এ মামলাটি তদন্ত করে ২০২১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ওই আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মো. রকিবুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, ১৮৪০ সালের পেনাল কোডের ৩০২ ধারাসহ তৎসংলগ্ন ধারায় এই রায় দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহ পরিবার শেষ করে দিতে পারে। তাই সমাজ ও পরিবারে সৌহার্দ্য ও পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধের চর্চা বাড়াতে হবে।