কুয়েট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ

অনলাইন ডেস্ক :  ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ, উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবিকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভের মধ্যে এবার খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

আগামীকাল বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের পর থেকে সব হল ও শিক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।

আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহেদুজ্জামান শেখ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

শাহেদুজ্জামান শেখ জানান, কুয়েটের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব একাডেমিক কার্যক্রমও বন্ধ থাকবে।

এদিকে, কুয়েট শিক্ষকদের প্রতিবাদের মুখে আজ দুপুর ১২টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনে তালা না দিয়ে ফিরে গেছেন শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুনঃ   খেটে খাওয়া মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার রাতে তালা ভেঙে বাসভবনে প্রবেশ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাছুদ। এর আগে ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে তাঁর বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। আজ সকাল ১০টার দিকে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে তাঁর বাসভবনে বৈঠক করছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে ১৮-২০ জন শিক্ষার্থী ভবনের সামনে এসে ভেতরে কেউ থাকলে পাঁচ মিনিটের মধ্যে বেরিয়ে আসতে মাইকে ঘোষণা দেন। পরে শিক্ষকেরা বেরিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানান। এ সময় প্রায় আধা ঘণ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন শিক্ষকেরা। তখন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনে তালা না দিয়ে ফিরে যান।

এদিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে ১৯ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় চার সদস্যের কমিটি গঠন করে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। আজ ছিল প্রতিবেদন দাখিলের শেষ দিন। তবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে কমিটিকে আরও সাত দিন সময় দেওয়া হয়। কমিটির সভাপতি এবং কুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্সেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম এ হাসেমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সময় বৃদ্ধি করা হয়।

আরও পড়ুনঃ   বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের নাম পরিবর্তন করে প্রজ্ঞাপন

১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদলের লিফলেট বিতরণকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা প্রথমে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধসহ পাঁচ দফা দাবি ঘোষণা করেন। পরে উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফার আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছিল।