ছুটিতে পাঠানো হাইকোর্টের বিচারপতি নূর উদ্দিনের পদত্যাগ

অনলাইন ডেস্ক : ছুটিতে পাঠানো হাইকোর্টের বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিন রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসন বিভাগ থেকে পাঠানো এক বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) শফিকুল ইসলামের পাঠানো এই বার্তায় বলা হয়, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল কর্তৃক অনুসন্ধান পরিচালনাধীন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে নিজ স্বাক্ষরযুক্ত পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন।

জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসরে যাওয়ার পর বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর হাই কোর্টের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান শাহেদ নূর উদ্দিন। দুই বছর পর তার নিয়োগ স্থায়ী হয়।

বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিন ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক থাকাকালে বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় দিয়েছিলেন। ক্ষমতার পালাবদলের পর হাই কোর্ট ওই মামলার সব আসামিকে খালাস দেয়।

আরও পড়ুনঃ   সাংবাদিক আবেদ খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

জজ আদালতের বিচারক থাকাকালে ঢাকার সনি হত্যা মামলা, সাবেক এমপি আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলা, সন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নান হত্যা মামলা, অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান মণ্ডল হত্যা মামলা, সাবেক ডেপুটি স্পিকার হুমায়ন খান পন্নীর স্ত্রী সুলতানা পন্নী হত্যা মামলা, পুলিশ টেলিকম হত্যা মামলা, ফরিদপুরের সাংবাদিক গৌতম হত্যা মামলা, ওয়ার্ড কমিশনার নিউটন হত্যা মামলা, কলেজ শিক্ষিকা কৃষ্ণ কাবেরী হত্যা মামলা, পুরবী জুয়েলার্সের মালিক হত্যা মামলারও রায় দেন শাহেদ নূর উদ্দিন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনে অনার্স ও মাস্টার্স করা শাহেদ নূর উদ্দিন ১৯৮৩ সালের ২০ এপ্রিল মুন্সেফ হিসেবে বিচার বিভাগে যোগ দিয়েছিলেন। ২০০০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তিনি জেলা জজ পদে উন্নীত হন।

শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে নিয়োগ পাওয়া বেশ কয়েকজন বিচারককে অপসারণের দাবি ওঠার পর গতবছর ১৬ অক্টোবর ১২ বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তাদের হাই কোর্টে বিচারকাজ পরিচালনা থেকে বিরত রাখা হয়। ওই ১২ বিচারকের মধ্যে শাহেদ নূর উদ্দিন একজন।

আরও পড়ুনঃ   জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

নিয়ম অনুযায়ী, কোনো বিচারপতির বিষয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল সুপারিশ পাঠানোর পর রাষ্ট্রপতি তা বাস্তবায়ন করেন। তবে ওই সময় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল কার্যকর ছিল না।

বিচারপতি অপসারণে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত করে গতবছর ২০ অক্টোবর আপিল বিভাগ রায় দেয়। এর ফলে বিচারপতি অপসারণ প্রক্রিয়া নিয়ে গত সরকারের সময় যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, তার অবসান ঘটে।

এরপর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল হাই কোর্টের কয়েকজন বিচারকের বিষয়ে তদন্ত শেষে গত ডিসেম্বরে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রতিবেদন পাঠায়। তার দেড় মাসের মাথায় বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিনের পদত্যাগের খবর এলো।-ইত্তেফাক