১ বছরেই বিলিয়নিয়ার হয়ে রিয়াল মাদ্রিদের বিশ্বরেকর্ড, যেভাবে এত আয়

অনলাইন ডেস্ক : বিশ্বের প্রথম কোনো ফুটবল ক্লাব হিসেবে এক বছরেই বিলিয়ন রাজস্ব আয়ের বিশ্বরেকর্ড গড়েছে স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ। যুক্তরাজ্যের প্রখ্যাত আর্থিক হিসাব নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘ডেলয়েট’–এর গবেষণায় এই তথ্য জানা গেছে। ‘ফুটবল মানি লিগ’ নামে এই গবেষণায় উঠে এসেছে– গত ২০২৩-২৪ মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের আয় হয়েছে ১.০৫ বিলিয়ন ইউরো (১.০৯ বিলিয়ন ডলার)।

ইতিহাসে এই প্রথমবার কোনো ফুটবল ক্লাব হিসেবে রিয়াল মাদ্রিদ এক বছরে বিলিয়নার হয়েছে। গত মৌসুমে কার্লো আনচেলত্তির দলটি লা লিগা এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ শিরোপার ট্রেবল জিতেছিল। তাদের পরই অবস্থান করা ক্লাবগুলো অবশ্য বেশ পিছিয়ে। রাজস্ব আয়ে রিয়ালের পরে থাকা দুটি ক্লাব যথাক্রমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল ম্যানচেস্টার সিটি (৮৭২ মিলিয়ন ডলার) ও ফেঞ্চ ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেই বা পিএসজি (৮৩৯ মিলিয়ন ডলার)।

কেবল নিজেদের আয়েই রেকর্ড গড়েনি রিয়াল, দুইয়ে থাকা ম্যানসিটির সঙ্গেও তাদের ব্যবধানটা রেকর্ডগড়া। ডেলয়েটের হিসাবে দুই দলের রাজস্ব আয়ে পার্থক্য ২১৬ মিলিয়ন ডলারের। ইউরোপের অন্যতম সেরা এই ক্লাবের এত বড় আয়ের পেছনে রয়েছে ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর সংস্কার। যে কাজে ২০১৮ সালে তারা ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ নিয়েছিল। সংস্কারের পর বার্নাব্যুর মেটাল ছাদ, দোকান, ভিআইপি এলাকা বর্ধিতকরণ এবং প্রয়োজনে সরিয়ে নেওয়ার উপযোগী পিচ বসিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ   ৯ উইকেটের বিশাল জয়ে শক্তিশালী হয়ে ফিরল বাংলাদেশ

স্টেডিয়াম সংস্কারের পরই রিয়ালের রাজস্ব বাড়তে শুরু করে। তারা কেবল ম্যাচ ডে–তেই ২০২৩-২৪ মৌসুমে রাজস্ব পেয়েছে ২৫৮ মিলিয়ন ডলার। ৮০ ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ওই ভেন্যুতে মাঝে কনসার্ট আয়োজন বন্ধ রাখা হয়েছিল। কারণ আশপাশের মানুষরা শব্দ দূষণ নিয়ে ক্লাবটির বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছিল। সেই সমস্যা সুরাহা করে রিয়াল বার্নাব্যু পুনরায় চালু করে পপ মেগাস্টার টেলর সুইফটের জমকালো এক সঙ্গীতানুষ্ঠান দিয়ে। এ ছাড়া এই বছর স্প্যানিশ মাঠটিতে এনএফএল–এর প্রথম কোনো ম্যাচও আয়োজন করতে যাচ্ছে।

ডেলয়েট স্পোর্টস বিজনেস গ্রুপের প্রধান অংশীদার টিম ব্রিজ জানিয়েছেন, ‘ক্লাবের স্টেডিয়াম ম্যাচ ডে’র অর্জন নিয়েই তাদের মূল্য অনেক বাড়িয়েছে। ফুটবল ছাড়া বিনোদনদায়ী অন্য কাজেও ব্যবহার করার উপযোগী করা হয়েছে এই ভেন্যু। যা নতুন দর্শনার্থী, স্পন্সরদের আকৃষ্ট করার পাশাপাশি আরও অনেক সুযোগের দুয়ার খুলে দিচ্ছে। ফুটবল ক্লাবগুলোর বর্তমান ধারণা– স্পোর্টিং ব্র্যান্ড বৃদ্ধির চেয়ে মিডিয়া ও বিনোদনের মিশ্রণ বাণিজ্যিকভাবে তাদের আরও অনেক বেশি লাভবান করে তুলবে।’

আরও পড়ুনঃ   বিসিবি পরিদর্শন শেষে যা বললেন ক্রীড়া উপদেষ্টা

ডেলয়েটের গবেষণামতে, রিয়াল-সিটি ও পিএসজির পর বার্ষিক রাজস্ব আয়ে শীর্ষে পাঁচে আছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (৭৭ কোটি ১০ লাখ ইউরো) ও বায়ার্ন মিউনিখ (৭৬ কোটি ৫০ লাখ ইউরো)। তবে শীর্ষ ১০টি ক্লাবের মধ্যে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগই রাজত্ব করছে। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই ফুটবল লিগের ৬টি ক্লাব রয়েছে শীর্ষ দশে। প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো রয়েছে সপ্তম থেকে দশম স্থানে। তারা হচ্ছে– আর্সেনাল (৭১ কোটি ৬৫ লাখ ইউরো), লিভারপুল (৭১ কোটি ৪৭ লাখ ইউরো), টটেনহাম (৬১ কোটি ৫ লাখ ইউরো) ও চেলসি (৫৪ কোটি ৫৫ লাখ ইউরো)।