সবকিছুতেই সংস্কার দরকার, কিন্তু কালক্ষেপণ নয়: রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার : অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাহেবের সরকারকে সমস্ত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সমর্থন দিয়েছে। উনি একজন গুণী মানুষ। তিনি বাংলাদেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছেন। কিন্তু তাঁকে কোনো ধরনের বিভ্রান্তির মধ্যে যদি কেউ ফেলে, তাহলে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন জাগে। আপনি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তারিখ ঘোষণা করুন। আপনি বলুন যে এত সময়ের মধ্যে নির্বাচন হবে। আমরা আশা করি, সরকার যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং সত্যিকার অর্থে একটা গণতন্ত্র আসবে, মানুষ স্বাধীন থাকবে।’

আজ মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী নগরের শহীদ জিয়া শিশুপার্ক এলাকায় রাজশাহী মহানগর যুবদল আয়োজিত শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘মিথ্যাকে ঢেকে রাখা যায় না। এটা প্রকাশিত হয়। শেখ হাসিনা বলেছিলেন, “সবাইকে কেনা যায়, কিন্তু শেখ হাসিনাকে কেনা যায় না।” তিনি বলেছিলেন, “মানুষকে গণতন্ত্র দিয়েছি।” কিন্তু আপনি যে কত নিয়েছেন তা মানুষকে বলেননি। আপনি আপনার গণতন্ত্র মানে ভোটাররা ভোট দিতে যাবে না।’

আরও পড়ুনঃ   এবার জানা গেল শিবিরের রাবি শাখার সেক্রেটারির পরিচয়

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার গণতন্ত্র মানে নির্বাচনের সময় বিরোধী দলের সবাইকে জেলের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখা। উনি যে গণতন্ত্র দিয়েছিলেন, তাতে দেখেছি ভোটকেন্দ্রে চতুষ্পদ জন্তু বিচরণ করত, ভোটাররা যেত না। তিনি শুধু একটি দেশকে সমীহ করতেন, মুরুব্বি মানতেন। সে জন্যই বলতেন, “আমি ভারতকে যা দিয়েছি, তা তারা সারা জীবন মনে রাখবে।” আপনি কী দিয়েছেন, যা বাংলাদেশের মানুষ জানে না। তারা আপনাকে সাপোর্ট করে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এ জন্যই আমাদের গণতন্ত্র থাকুক বা না থাকুক, এখানে পার্লামেন্ট থাকবে কি থাকবে না, সেই পার্লামেন্টে সত্যিকারের প্রতিনিধিরা যাবেন, নাকি নর্তকীরা সেখানে গান গাইবে মমতাজের মতো, আর পার্শ্ববর্তী দেশ তাদের সমর্থন করবে। এই পার্শ্ববর্তী দেশ আমাদের গণ-অভ্যুত্থানের পর খুবই অসন্তুষ্ট। সমস্ত বিশ্ব খুশি হলেও তারা এখনো মেনে নিতে পারেনি।’

আরও পড়ুনঃ   রাজশাহীতে ভবন নির্মাণে টাকা দিলেই মিলছে ফায়ার সনদ

বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা চক্রান্তের মধ্য দিয়ে আমরা গণতন্ত্রের পথে হাঁটছি। গণতন্ত্রের যে আরও শর্ত আছে, অর্থাৎ সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে হাঁটতে হবে। প্রয়োজনীয় যে সংস্কার, আমাদের জাতীয় সংসদ, সংবিধান, জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন—সবকিছুতে সংস্কার দরকার। কিন্তু সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ করে এটা নিয়ে তর্কবিতর্ক করলে হবে না। বাংলাদেশের মানুষ ১৭ বছর ভোট দিতে পারেনি। আওয়ামী লীগ অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনকে আকাশের তারা করে দিয়েছে। এখন দ্রুত নির্বাচন দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা, সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম মোস্তফা মামুন, রাজশাহী মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রিটন, সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম রবি প্রমুখ।