জয়পুরহাটে বেড়েছে আখ চাষাবাদ

এম.এ,জলিল রানা,জয়পুরহাট: জয়পুরহাটে বেড়েছে আখ চাষাবাদ,সাথে যুক্ত হয়েছে সাথী ফসল। আখের সাথে সাথী ফসল চাষাবাদ করে এ ফসল বিক্রির টাকা সহজে পাওয়াসহ আধুনিক বহুবিদ প্রযুক্তিগত নানান সুবিধা পেয়ে এ জেলায় বেড়েছে আখ চাষাবাদের ফলে উৎপাদন বেড়েছে জয়পুরহাট চিনিকলে। আগামীতে এই আখ চাষাবাদ যেন আরও বৃদ্ধি পায় সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিনিকল কর্তৃপক্ষ।

আখ চাষীরা বলছেন,কুইন্টাল প্রতি আখের দাম বৃদ্ধি, বিক্রির টাকা সহজেই বিকাশে পাওয়াসহ আখ চাষে নানান ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা বৃদ্ধির কারণেই আখ চাষাবাদ আগের তুলনাই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

চিনিকল সূত্র বলছে, গত (২০২৩-২৪) আখ মাড়াই মৌসুমে জেলায় আখ চাষাবাদ হয়েছে ২ হাজার ৫শ একর জমিতে । যা থেকে আখ উৎপাদন হয়েছে ৩৭ হাজার ৪৭৫ মে: টন । এক মাস মাড়াই মৌসুম শেষে উৎপাদিত এ আখ থেকে চিনি উৎপাদন হয়েছে ১ হাজার ১৭০ মে:ন টন।

চিনিকল কর্তৃপক্ষের নানা উদ্যোগের ফলে এবার (২০২৪-২৫)চাষাবাদ মৌসুমে জেলায় আখ চাষাবাদ হয়েছে ৩ হাজার ২একর জমিতে। যা থেকে এবার ৫৫ হাজার মে: টন আখ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে। যেখান থেকে ৩ হাজার ২৫ মে: টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ। গত ২০ ডিসেম্বর-২০২৪ চলতি মাড়াই মৌসুম (২০২৪-২৫) আখ মাড়াইয়ের উদ্বোধন করা হয়।

আরও পড়ুনঃ   প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আখের জমিতে সাথী ফসল হিসেবে আলুসহ অন্য ফসল চাষ করতে প্রযুক্তিগত নানান সহযোগিতা, বীজ ও সারের জন্য ঋণ সুবিধা,আখের মূল্য বৃদ্ধি ও বিকাশের মাধ্যমে আখ বিক্রির টাকা প্রদান ছাড়াও নিয়মিত মোটিভেশনের কারণে এবার সাড়ে ৪ হাজার একর জমিতে আখ রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।আর ইতোমধ্যে ১ হাজার ১২৩ একর জমিতে আখ রোপণ সম্পন্ন হয়েছে।

জেলার সদর উপজেলার রাঘবপুর গ্রামের আখ চাষী আনোয়ার হোসেন বলেন, আখ চাষাবাদ একেবারে ছেড়েই দিয়েছিলাম। চিনিকল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ব্যাংক ঋণ সুবিধা, আখের সাথ সাথী ফসল চাষের নানান ধরনের পরামর্শ, বিনামূল্যে বীজ সরবরাহসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার ফলে আবারো চাষ শুরু করেছি আখ চাষ। সাথী ফসল হিসেবে তাই এবার আমি দুই বিঘা জমিতে চাষ করেছি আলু।

আরও পড়ুনঃ   শেখ হাসিনাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে: ড. ইউনূস

জেলার পাঁচবিবি উপজেলার শিমুলতলী গ্রামের আখ চাষী রফিকুল ইসলাম বলেন,আগে চিনিকল থেকে আখ বিক্রির টাকা পেতে দুর্ভোগ পোহাতে হতো। এখন সহজেই বিকাশের মাধ্যমে পাওয়া যায়। আগে আখের সাথে অন্য কোনো ফসল না থাকায় তেমন লাভ হতো না। এখন আখের সাথে বিভিন্ন ধরনের সাসী ফসল চাষ করায় আখ উৎপাদনে খরচ কম, লাভ হচ্ছে বেশি।তাই দিন দিন আখ চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছি।
জেলা আখ চাষী কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবু তালেব চৌধুরী বলেন, আগের তুলনায় চাষীরা আখচাষে বেশ কিছু সুবিধা পাচ্ছে। এজন্য গত দু’বছর থেকে চাষাবাদ বেড়েছে। উন্নত বীজ সরবরাহের পাশাপাশি আখের দাম বাড়ানো গেলে কৃষকদের আগ্রহ আরও বাড়বে।

চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) কৃষিবিদ তারেক ফরহাদ বলেন, মিলগেটে প্রতি কুইন্টাল আখের দাম ৬০০ টাকা আর মিলের বাইরে ৫৮৭ টাকা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার পাশাপাশি আখের সাথে সাথী ফসল চাষেও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। আখ চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করতে নানান উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি আগামীতে আখ চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ আরও বাড়বে।