বিমান দুর্ঘটনায় ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করছেন পরিববহন মন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক : দক্ষিণ কোরিয়ায় সাম্প্রতিক বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিজের ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন দেশটির পরিবহন মন্ত্রী পার্ক স্যাং-উও। মঙ্গলবার সিউলে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী পার্ক স্যাং-উও বলেছেন, ‘‘তিনি জেজু এয়ারের বিমানের প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার দায় নিয়ে পদত্যাগ করতে চান।’’

গত ২৯ ডিসেম্বর থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশে ১৮১ যাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল জেজু এয়ারের ফ্লাইট ৭সি২২১৬। জেজু এয়ারের এই বিমানে ১৭৫ জন যাত্রী ও ৬ জন ক্রু ছিলেন। দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বিমানটি।

স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানটি মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করছে। রানওয়েতে প্রবল গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে দেখা যায় বিমানকে। এ সময় বিমানের কোনও ল্যান্ডিং গিয়ার দেখা যাচ্ছিল না। এই দুর্ঘটনায় বিমানের ১৭৯ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে।

আরও পড়ুনঃ   দিল্লির মসনদে ফিরল বিজেপি, মোদি বললেন সুশাসনের জয়

দেশটির পরিবহন মন্ত্রী পার্ক স্যাং-উও বলেছেন, ‘‘এই বিপর্যয়ের জন্য আমার ব্যাপক দায় অনুভব করছি।’’ তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলা করে তিনি পদত্যাগের সঠিক সময় বের করার চেষ্টা করবেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার পরিবহন মন্ত্রণালয় বলেছে, বিমানবন্দরের অবতরণ ব্যবস্থাগুলোর সুরক্ষা দ্রুত উন্নত করা হবে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অবতরণ ব্যবস্থার কারণেই বিপর্যয়কর দুর্ঘটনায় ১৭৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল বিষয়ক উপ-পরিবহন মন্ত্রী জু জং-ওয়ান স্বীকার করেছেন, রানওয়ে নির্মাণের সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তবে কোরিয়ার ও বিদেশের নিয়ম অনুযায়ী তা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বিমানের ১৮১ আরোহীর ১৭৯ জনের মৃত্যু, বাকি দুজন বাঁচলেন যেভাবে
রানওয়ের সামনের প্রাচীর কীভাবে নির্মাণ করা হয়েছে, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দুর্ঘটনার তদন্তের অংশ হিসেবে পুলিশ গত সপ্তাহে জেজু এয়ার এবং মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যালয়ে অভিযান চালায়।

আরও পড়ুনঃ   ট্রাম্পের পুত্র ব্যারন যেন আমেরিকার সবচেয়ে দীর্ঘকায় রহস্য

বিমান দুর্ঘটনায় তদন্ত দলের প্রধান লি সেউং-ইওল বলেছেন, দুর্ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা বিমানের একটি ইঞ্জিনে পাখির পালক পাওয়া গেছে। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বিমানের একটি ইঞ্জিনে একটি পাখি আঘাত করছে। প্রাথমিকভাবে পাখির আঘাতের কারণে ব্মিানটি বিধ্বস্ত হয়েছে অনেকে ধারণা করলেও বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাধারণত পাখির আঘাতের কারণে বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ার বিকল হয় না।

সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার তদন্তকারী দলের দুই সদস্য বিধ্বস্ত বিমানের ক্ষতিগ্রস্ত ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার পুনরুদ্ধার ও বিশ্লেষণ করতে যুক্তরাষ্ট্রে রওনা হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের কাছে এই রেকর্ডার হস্তান্তর করবেন তারা।