যুগান্তকারী সফরে বাংলাদেশে আসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক : ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গত বছরের আগস্টের শুরুতে শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। নাটকীয় পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের পর পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটছে।

এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সফরে আসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণে আগামী মাসে তিনি বাংলাদেশ সফর করবেন এবং তার আসন্ন এই সফরকে যুগান্তকারী বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার আগামী মাসে বাংলাদেশ সফর করবেন। আসন্ন এই সফরটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ যা গত বছরের আগস্টে ভারতপন্থি সরকারের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ সম্পর্ককেই সামনে তুলে ধরছে।

আরও পড়ুনঃ   প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শোইগুকে সরিয়ে দিলেন পুতিন

এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, ২০১২ সালের পর পাকিস্তানের কোনও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর হতে চলেছে। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ইসহাক দার বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আমন্ত্রণে ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি ঢাকা সফর করবেন।

এদিন ইসহাক দার সাংবাদিকদের সামনে প্রধান বৈদেশিক নীতির ঘটনাবলী এবং সরকারের অর্জন এবং ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জের বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিচ্ছিলেন। পাকিস্তনের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও নিশ্চিত করেছেন, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসও পারস্পরিক সম্মত তারিখে ইসলামাবাদ ভ্রমণের জন্য পাকিস্তানের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।

এর আগে ২০১২ সালে সর্বশেষ পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন হিনা রব্বানি খার। মূলত উন্নয়নশীল আট মুসলিম দেশের জোট ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজিদকে আমন্ত্রণ জানাতে সেসময় ঢাকা সফর করেছিলেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ   পাকিস্তানে ইমরান খানের হাজার হাজার সমর্থক গ্রেপ্তার

২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের মেয়াদে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন ছিল। আওয়ামী লীগের এই নেত্রী ভারতের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য পাকিস্তানের একাধিক প্রচেষ্টার প্রতিদান দেননি।

তবে রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের পর গত বছরের আগস্টে হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত ও ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে বেশ কিছু অগ্রগতিও হয়েছে।

এছাড়া বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির অনুমতি দিয়ে পাকিস্তানি পণ্যের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞাও তুলে নিয়েছে। এছাড়া সমুদ্রপথে দুই দেশ সরাসরি বাণিজ্যও শুরু করেছে।

এদিন সাংবাদিকদের সামনে ইসহাক দার বাংলাদেশকে ‘ভ্রাতৃত্বপূর্ণ দেশ’ বলে অভিহিত করে বলেন, পাকিস্তান ঢাকাকে সব ধরনের সহায়তা দেবে।