ডাকাতিতে বাধা দেওয়াতেই কি এই হত্যাকাণ্ড

অনলাইন ডেস্ক : চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় মেঘনা নদীতে থেমে থাকা মেসার্স বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের আল বাখেরাহ নামক জাহাজ থেকে পাঁচ জনের মরদেহ ও গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় আরও দুজনের। পুলিশের ধারণা জাহাজে ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ওই ইউনিয়নের মাঝের চর নামক স্থান থেকে নিহতদের মরদেহ ও আহতদের উদ্ধার করে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ। এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান।

নিহতরা হলেন-জাহাজের মাস্টার কিবরিয়া, ইঞ্জিনচালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রিজার সজিবুল, আজিজুল ও মাজেদুল ইসলাম। নিহত একজনের নাম জানা যায়নি। আর আহত ব্যক্তি হলেন-জুয়েল। আহত ও নিহত ব্যক্তিদের বাড়ি নড়াইলে।

মেসার্স বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের অপর জাহাজ মুগনি-৩ এর মাস্টার বাচ্চু মিয়া ও গ্রিজার মো. মাসুদ জানান, আল বাখেরাহ রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসে। এরই মধ্যে কোম্পানির মালিক শিপন বাখেরাহ জাহাজে ফোন করে কাউকে পায়নি। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় মুগনি জাহাজ থেকে যোগাযোগ করার জন্য বলে। ওই সময় মুগনি জাহাজটি মাওয়া থেকে ঘটনাস্থল দিয়ে অতিক্রম করার সময় বাখেরাহ জাহাজটি দেখতে পায়। ওই সময় তারা জাহাজের লোকদের রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ৯৯৯ কল দেয়।

আরও পড়ুনঃ   রাজশাহীতে দেড় কেজি গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার

এদিকে, ৯৯৯ এ কলের সূত্র ধরে চাঁদপুর থেকে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মোশফিকুর রহমান এর উপস্থিতে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ জাহাজ থেকে প্রথমে ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করে এবং ৩ জনকে আহত অবস্থায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আনিসুর রহমান বলেন, জুয়েল নামে আহত একজনের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গলা ও শ্বাসনালীও কাটা ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। আর উদ্ধার করে আনা সজিবুল ও মাজেদুলকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। তাদের মাথায় ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ   দুর্গাপুরে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে গ্রেপ্তার ১০, সন্তুষ্ট সাধারণ মানুষ

নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, জাহাজে ডাকাতি করতে বাধা দেওয়ায় তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাটির তদন্ত চলছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।

তিনি বলেন, আহত একজন হাতের ইশারায় জানিয়েছে তারা ৮ জন ছিলেন। ঘটনাটি কীভাবে হয়েছে এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। ডাকাতি, কিংবা অন্য কোনো কারণে হতে পারে। তদন্ত করার পরে জানা যাবে। নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সঙ্গে নিরাপত্তা বিষয়ে কথা বলেছি। কারণ এই রুটে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল করে। যাতে করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়।-ইত্তেফাক