নির্বাচনমুখী যাত্রা শুরু, সার্চ কমিটির প্রজ্ঞাপন শিগগির: আসিফ নজরুল

অনলাইন ডেস্ক: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচনমুখী যাত্রা শুরু হয়ে গেছে। নতুন নির্বাচন কমিশনের সার্চ কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন শিগগরিই জারি হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সামনে এতথ্য জানান।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের সঙ্গে দেশের নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কীনা জানতে চাইলে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে তাদের সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। তবে আমাদের সরকার নির্বাচনমুখী প্রক্রিয়া গ্রহণ করার যে কাজ, সেটা শুরু করে দিয়েছে। নির্বাচনমুখী যাত্রা শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশন গঠন করতে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। সে প্রজ্ঞাপনটা প্রধান উপদেষ্টা স্বাক্ষর করলেই আপনারা জানতে পারবেন। আজ-কালের মধ্যে জেনে যাবেন।’

আসিফ নজরুল বলেন, সার্চ কমিটি হয়ে গেলে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলে ভোটার তালিকা ঠিক করতে হবে। ভোটার তালিকা নিয়ে প্রচুর প্রশ্ন ছিল। গত নির্বাচন এমন ভুয়া নির্বাচন ছিল, ভোটার তালিকা নিয়ে মানুষের মাথাব্যথা ছিল না।

তিনি বলেন, ‘এবার অসাধারণ একটা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করব। ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে হবে। শুধু এতটুকু বলতে পারি, আমাদের নির্বাচনমুখী যাত্রা শুরু হয়ে গেছে।’

আরও পড়ুনঃ   আবারও শাহবাগ অবরোধ সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের, পুলিশের জলকামান

আজ মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্কের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন আইন উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক তাঁর কাছে এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডের বিধান রহিত করা যায় কীনা সে বিষয়ে মি. টুর্ক কথা বলেছেন। এ প্রসঙ্গে তাকে বলা হয়েছে, ‘বর্তমান বাস্তবতায় এটা সম্ভব না। বাংলাদেশের পেনাল সিস্টেম ও শত বছরের জাস্টিস সিস্টেমে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। যে ফ্যাসিস্টদের হাতে হাজার হাজার তরুণ নিহত হয়েছে, তাদের হত্যার বিচারকে সামনে রেখে হঠাৎ করে মৃত্যুদণ্ড বাতিল করার প্রশ্নই আসে না।’

আসিফ নজরুল বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে বিচারকে অধিকতর গ্রহণযোগ্য করতে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন আইনগত সংস্কারে জড়িত রয়েছে। এছাড়া ফরেনসিক সাপোর্ট, টেকনিক্যাল সাপোর্ট বা ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়েও সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তারা।

ভলকার টুর্ককে আশ্বস্ত করে আইন উপদেষ্টা বলেছেন, ‘এই ট্রাইব্যুনালে সুবিচার করা হবে। প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা থেকে এটা করা হচ্ছে না। অবিচার করার জন্য আগের আদালতে যেরকম হয়েছে, সেরকম অবিচার করা হবে না। এখানে কোন কিছু লুকানোর নেই। যে কেউ এসে এই বিচার দেখতে পারবেন।’

আরও পড়ুনঃ   সীমান্তে বেড়া নির্মাণে বাংলাদেশের সহযোগিতা আশা করে ভারত: প্রণয় ভার্ম

তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কাজ বিশেষ করে সংস্কার কাজ, ট্রান্জিশনাল ট্রান্সফরমেশন, ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানপরবর্তী অন্তবর্তী সরকারের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁর পক্ষ থেকে দুটি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন, একটি বিচার বিভাগ স্বাধীন করা। তাঁকে বলা হয়েছে, এ প্রসঙ্গে অবশ্যই কমিটেড। প্রধান বিচারপতি ইতোমধ্যে একটি পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছেন। এটি নীতিগতভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। এর মডালিটিজ কেমন হবে, সেটা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হবে। এটা ছাড়াও বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন সম্পর্কে তাঁকে অবহিত করা হয়েছে।’

আইন উপদেষ্টা বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণে উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালত নিয়ে আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে কী কী সংস্কার ভাবনা রয়েছে, সেটা হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে। তিনি এসব বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।