ক্ষমতার দাপটে মার্কেটের রাস্তা বন্ধ করে সিড়ির নিচে দোকান নির্মাণ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মর্ডান মার্কেটের সিড়ির নিচ, দখল করে অবৈধভাবে পৌরসভার নামে দু’টি দোকান নির্মাণ করেছে একজন দোকান মালিক।

আর এ অভিযোগ উঠেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মোখলেসুর রহমানের মদদপুষ্ট সুমন নামে ওই দোকান মালিকের বিরুদ্ধে। মার্কেট কমিটি ও সচেতন দোকান মালিকদের মধ্যে এনিয়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হলেও এতদিন পৌর মেয়রের ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ কথা বলতে সাহস পায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর মডার্ন মার্কেটের সিড়ির নিচে দোকান নির্মান করেছেন পৌর মেয়র মোখলেসুর রহমানের তৎকালীন আশীর্বাদপুষ্ট সুমন ক্লথ স্টোরের মালিক সুমন।

ওই মার্কেটের একজন চা দোকানী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নির্মিত মার্কেটে সিড়ির নিচের দোকান অর্ধকোটি টাকা মূল্যের। অথছ কায়দা করে তৎকালীন সময় সাবেক মেয়র মোখলেসুর রহমানকে ম্যানেজ করে সুমন লাখ খানিক টাকায় ২ টি দোকান বাগিয়ে নিয়েছেন। অপর একজন চা দোকানী বলেন, দেড় লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে আমি এই মার্কেটে দোকান নিয়েছি। তারপরও প্রতি মাসে দোকান ভাড়া দিতে হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সিড়ির নিচ দখল করে দোকান দুটো প্লানপাশ ছাড়া এমনভাবে করা হয়েছে। যার কারনে মার্কেটে আগত ক্রেতাদের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ   ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে রাতভর অভিযান

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ভাড়াটিয়া দোকান মালিকরা বলেন, ক্ষমতার দাপটে সুমন ক্লথ স্টোর এর মালিক কোনো প্লানপাশ ও টেন্ডার ছাড়া তৎকালীন মেয়রের যোগসাজশে মোটরসাইকেল রাখার জায়গা দখল করে সিঁড়ির নিচে দোকান দুটো নির্মাণ করেছে। যা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত ভাবে। তারা আরও বলেন, পৌর মর্ডান মার্কেটে নকশা বহির্ভূতভাবে সিঁড়ির নিচে দোকান ঘর নির্মাণ করার জন্য টেন্ডার ছাড়া অগ্রিম বাবদ লাখ খানিক টাকা নিয়েছেন পৌর মেয়র।

সুমনের নিকট এবিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, টাকার বিনিময়ে কাগজ করে পৌর কর্তৃপক্ষের দোকানের জায়গা বরাদ্দ নিয়েছি। অবস্য কাগজ পত্র দেখতে চাইলে, দেখাতে ব্যর্থ হন এবং প্রতিনিধিকে ম্যানেজের চেষ্টা করেন সুমন।

অবৈধভাবে সিড়ির নিচে দোকান নির্মাণের বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ মর্ডান মার্কেটের সভাপতি মোঃ মোখলেসুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আশরাফুল হোসেন বলেন, অবৈধভাবে সিড়ির নিচে দোকান নির্মাণ সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত ভাবে করেছে। আমাদের কমিটির কোনো পরামর্শ কিংবা আলোচনা করেনি সুমন ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এটা সাবেক পৌর মেয়র মোখলেসুর রহমানের যোগসাজশে করেছে, এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম কিন্তু কর্নপাত করেনি। খুব শীঘ্রই সিড়ির নিচের অবৈধ দোকান দুটো উচ্ছেদের জন্য পৌর প্রশাসক ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করবো।

আরও পড়ুনঃ   সাপাহার উপজেলা নির্বাচনে বিজয়ী হলেন যারা

এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার দায়িত্বশীল পৌর প্রশাসক দেবেন্দ্রনাথ ওঁরাও বলেন, আমি জনপ্রতিনিধি কিংবা পৌর মেয়র নয় আমি পৌর প্রশাসক। সবে মাত্র দায়িত্ব গ্রহণ করেছি এসব বিষয়ে আমি অবগত নয় তারপরও আপনারা সঠিক তথ্য সংবলিত সংবাদ করুন, ব্যবস্থা নিবো।

পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, টেন্ডার ছাড়া নিউ মার্কেটের দোকান লিজ দেওয়া কিংবা অগ্রিম টাকা নেয়ার কোন বিধান নেই। যদি কেউ টেন্ডার ছাড়া নিয়ে থাকেন সেটা সম্পূর্ণ অবৈধ। মার্কেট পরিদর্শন অফিসার দুলাল দোকান দেয়া-নেয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ অবৈধ অকপটে স্বীকার করে বলেন, সাবেক মেয়র মোখলেছুর রহমান স্বজনপ্রীতি দেখিয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে টেন্ডার ছাড়া সিঁড়ির নিচ বরাদ্দ দিয়েছিলেন। তবে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সার্বিক বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাছমিনা খাতুন বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ মর্ডান মার্কেট পৌরসভার আওতায়। তারা যদি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সহায়তা চায়, সেক্ষেত্রে আমরা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে তাদের সহযোগিতা করবো।