ধৈর্য ধরেন, পরিবর্তন হয় কি না দেখেন : এম সাখাওয়াত হোসেন

অনলাইন ডেস্ক : নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, আমরা ধীরে ধীরে পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা চাই না আর কিছু লোক পোর্ট অচল করে। সারাদিন কিন্তু তিন পোর্টের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলছি। আপনারা জানেন স্থলবন্দর কতগুলো, সেগুলো এখান থেকে আরও বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত। জঞ্জাল দূর করতে একটু তো সময় লাগবে। মাত্র দুই মাসের মাথায় ২২ বছরের পড়ে থাকা কাজ দূর করা অনেক কঠিন। যেসব যন্ত্র পড়ে আছে সেগুলোর ব্যবহার ঠিকমতো করা হবে। ২২ বছর ধৈর্য ধরেছেন। এখন ২২ মিনিটে দূর করা সম্ভব না। অন্তত ২২ মাস ধরেন। পরিবর্তন হয় কি-না দেখেন।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি-৩ জেটিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ বন্দরকে আমাদের জঞ্জাল মুক্ত করতে হবে। আর এটা যাতে কুইক রেসপন্স করতে পারে সেটার জন্য কাজ করতে হবে। আমি বে টার্মিনালের জায়গাগুলোও দেখে এসেছি। আমি এ মুহূর্তে সেটা নিয়ে খারাপ-ভালো বলব না। আপাতদৃষ্টিতে বে টার্মিনালে কোনো সমস্যা দেখছি না। এখানে বিনিয়োগ করার জন্য অনেকে বিদেশি বিনিয়োগকারী বসে আছে। আগামী বেশ কিছু বছর পরে এ টার্মিনালের যে সম্ভাবনা সেটা দেখতে পাব। আমাদের দিনদিন আমদানি-রপ্তানি বাড়ছে। সেগুলোও লোড-আনলোড করতে সমস্যা হবে না। এখানে সৌদি আরব, নেদারল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশ বিনিয়োগ করেছে। বিনিয়োগকে যদি আমরা নিরুৎসাহিত করি তাহলে আমাদের এখানে কিন্তু বাইরের কেউ আসবে না।

আরও পড়ুনঃ   পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করে বাংলাদেশের ইতিহাস

তিনি বলেন, গত তিনদিন ধরেই এ পোর্টে ঘোরাঘুরি করছি। আমরা ম্যানুয়ালি থেকে যদি অটোমেশন করতে পারি তাহলে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সময় আরও কমে যাবে। আগে একটি জাহাজ আসলে ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগতো পণ্য খালাস করতে। এখন সেটা অনেক উন্নতি হয়েছে। তাই বলে আমরা যে সন্তুষ্ট, তা একদম নয়। অটোমেশন হলে কনটেইনার লোডিং ও আনলোডিংয়ের সময় আরও কমবে। বন্দরের অব্যবস্থাপনার জন্য কেউ একা দায়ী নন। এখানে ২০ বছর আগের কনটেইনার পড়ে আছে। ১২ থেকে ১৪ বছর ধরে গাড়ি পড়ে আছে। এগুলো নিলাম করার কাজ এনবিআরের (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড)। আমি এখনও ওদের সঙ্গে কথা বলিনি। জানি না তাদের সমস্যা কী। বন্দরের জায়গা যদি এভাবে ভর্তি হয়ে থাকে তাহলে কার্যক্রম কীভাবে বাড়বে।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, পোর্টের জায়গা যদি খালি না করে এত কনটেইনার আছে এগুলো আমরা রাখব কোথায়। ফিরে গেলে আমি এনবিআরের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলব। শুধুমাত্র বন্দর নয়, আরও যেসব সংস্থা আছে তাদেরকেও কাজ করতে হবে। যদি কাজ না করে তাহলে বন্দর কর্তৃপক্ষ কাজগুলো করতে পারবে না। আমাদের কাছে বিনিয়োগকারী আছে। তারা অটোমেশনে কাজ করতে চায়। দুর্নীতি থাকলে অবশ্যই বলবেন। এখানে অনেক অনিয়ম হয়েছে। সেটা বলতে গেলে সারাদিন লাগবে। অনেককে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। তারা কারও চাচা, ভাই বা মামা। এসবই কিন্তু আমাদের নজরে আছে।

আরও পড়ুনঃ   হাসিনার পতন ঘটলেও চূড়ান্ত বিজয় এখনও আসেনি : হাসনাত আবদুল্লাহ

আওয়ামী লীগ সরকার আমলের শেষ দিকে বিদেশি বার্থ অপারেটর নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, যদি আমাদের স্বার্থ রক্ষা করে বন্দরের মুনাফা বেশি হয় এবং যারা শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে তাদের কোনো সমস্যা না হয় তাহলে আমরা এটা চিন্তা করতে পারি। রাতারাতি এটা হবে না। প্রত্যেক স্টেপ আপনারা জানতে পারবেন। এটা নিয়ে একটি কমিটি হবে। পোর্টের জন্য যেটা ভালো হবে সেটা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ২২ বছর ধরে যারা এখানে কাজ করছে তারা কারা? অন্যায়ভাবে অনেক কাজ এখানে হচ্ছে। আর কিছু বলতে চাই না। টেন্ডার এখন আর ডিপিএম পদ্ধতিতে হবে না। এখন ওপেন দরপত্র আহ্বান করা হবে। সেটা আবার আমরা রিভিউ করব। যাতে লোকাল বা বিদেশির মধ্যে কোনো নির্দিষ্ট লোক না আসে।