রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের দ্রুত সংলাপ চায় বিএনপি

অনলাইন ডেস্ক: রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দ্রুত সংলাপে বসা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘অতি দ্রুত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আলোচনায় বসা দরকার। তারা কী চায়, জনগণ কী চায়, আমরা কী চাই—এ বিষয়টা আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করতে হবে। না হলে অনেক ভুল–বোঝাবুঝি হতে পারে।’

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ঢালাওভাবে মামলা না করারও আহ্বান জানান দলটির মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ঢালাওভাবে মামলা যাতে না হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলব—আপনারা প্রাথমিকভাবে তদন্ত করুন। এ বিষয়ে দলের নেতা-কর্মীদেরও আহ্বান জানাব, এমন কোনো মামলা করবেন না, যাতে সারবস্তু থাকবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা একটা ক্রান্তিকাল পার করছি। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করে একটি স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। কারণ, অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হলো নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা। সরকারকে সহযোগিতা না করলে কিন্তু সেটা হবে না। মনে রাখতে হবে, গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া পরিবর্তন হয় না। এই সরকারকে আমরা যৌক্তিক সময় দিতে চাই।’

আরও পড়ুনঃ   প্রথম ধাপের বিশ্ব ইজতেমা ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজকে ছাত্র-জনতার বিপ্লব নস্যাতের চক্রান্ত হচ্ছে। কিছু অপপ্রচার চালানো হচ্ছে ভারত থেকে। যারা সাম্প্রদায়িকতাকে উসকে দিচ্ছে।’

ফখরুল অভিযোগ করেন, ‘বিএনপির বিরুদ্ধে ফের পরিকল্পিতভাবে চক্রান্ত হচ্ছে। অথচ গত ১৫ বছরে বিএনপির প্রত্যেকটি নেতা-কর্মী নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার। মিথ্যা মামলায় জর্জরিত। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারান্তরীণ করা হয়। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশান্তরিত করা হয়েছে। এমন কোনো নেতা-কর্মী নেই যাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়নি।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি অপকর্ম করে না। কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে অপকর্ম করছে, সেটার কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমাদের প্রায় ৫৬ থেকে ৫৭ জন নেতা-কর্মীর, যারা এগুলো করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।’

আরও পড়ুনঃ   প্রধানমন্ত্রী চীন সফর শেষে দেশে ফিরেছেন

জামায়াত-শিবিরের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নই। যারাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্বের পক্ষে, তারা রাজনীতি করবে, এটা তাদের অধিকার।’

গতকাল মঙ্গলবার রাতে অনুষ্ঠিত দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বন্যার কারণে এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিতে যে অর্থ ব্যয় হওয়ার কথা ছিল, সেটি ত্রাণ তহবিলে দেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কর্মসূচির মধ্যে শুধু দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।’

সংবাদ সম্মেলন আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।