দেশ পুনর্গঠনের পর নির্বাচন, বিদেশি কূটনীতিকদের ড. ইউনূস

অনলাইন ডেস্ক: অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। তবে তার আগে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার ও পুনর্গঠন করতে চায় তারা।

রোববার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফ করে এ বার্তা দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

ড. ইউনূসকে উদ্ধৃত করে প্রেস সচিব বলেন, তিনি খুব দ্রুত নির্বাচনের কথা বলেছেন। অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের ম্যান্ডেটটা হচ্ছে- নির্বাচনটা তখনই করবেন যখন রিফর্মগুলো ক্যারি আউট করা যায়। যেটা জুডিশিয়ারি থেকে সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, সিকিউরিটি রিফোর্স কিংবা মিডিয়াতে। সমস্ত কিছু রিফর্ম অ্যাড্রেস করার পর যত দ্রুত নির্বাচন করতে পারে, এটা হচ্ছে ওনাদের মূল কাজ।

ব্রিফিংয়ে ড. ইউনূস সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকতে শেখ হাসিনা সরকারি সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। দেশের বিচার ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে। দেশের মানুষের ভোট দেওয়ার অধিকার ক্ষুণ্ন করেছে। নতুন প্রজন্ম তাদের ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ব্যাংক ডাকাতি করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ   নিক্সনের অন্যতম সহযোগী জব্বার মাস্টার গ্রেপ্তার

কূটনীতিকদের ড. ইউনূস জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা সমাজে শান্তি ফিরিয়ে আনা। ছাত্র আন্দোলনে শত শত মানুষ মারা গেছে। অনেক ছাত্র চোখে গুলি খেয়েছে, আমি তাদের দেখতে গিয়েছিলাম। আমরা জানি না, ওদের কী হবে। পৃথিবীর কোনো দেশের ছাত্রদের এত ত্যাগ করতে হয়নি। পৃথিবীর কোথাও নাগরিকরা এতটা মানবাধিকার বঞ্চিত হয়নি।

শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হওয়া হত্যাকাণ্ড তদন্ত করবে জাতিসংঘ। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান এটাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, আমরা চাই, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যা করা হয়েছে, এটার গ্রহণযোগ্য ও পক্ষপাতহীন একটা তদন্ত হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘকে পূর্ণ সমর্থন দেবে।

আরও পড়ুনঃ   দাবদাহের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৫ দিন বন্ধ ঘোষণা

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, ব্রিফিংয়ে ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন সংস্থার ৫০-এর বেশি কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন।

কূটনীতিকরা কোনো প্রশ্ন করেছেন কি না- জানতে চান সাংবাদিকরা। জবাবে প্রেস সচিব বলেন, প্রশ্ন-উত্তর ছিল না। উনি সমর্থন চেয়েছেন। বাংলাদেশকে পুনর্নিমাণে পূর্ণ সমর্থন চেয়েছেন।

ড. ইউনূস বলেন, শিক্ষার্থীরা যে বাংলাদেশ চায় সেটা করার চেষ্টা করবেন। এমন একটা বাংলাদেশ যেখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থাকবে, বাক স্বাধীনতা থাকবে, মানবাধিকার থাকবে। একইসঙ্গে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা তুলে ধরেন তিনি।

প্রেস সচিব জানান, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, বাংলাদেশ যত আন্তর্জাতিক অ্যাগ্রিমেন্ট করেছে, তার যত লিগ্যাল অবলিগেশন আছে সেগুলো ফুলফিল করা হবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ, গ্লোবাল এজেন্সিসহ পার্টনাদের রোহিঙ্গাদের অর্থায়নে সহায়তা অব্যাহত রাখতে অনুরোধ করেছেন তিনি। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ওনারা এখন জোর দিচ্ছেন ম্যাক্রো ইকোনমিক স্টাবিলিটি নিশ্চিত করার ওপর।