বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ায় ধাওয়া খেয়ে মসজিদে আশ্রয় নেওয়া রতন জিলাদার কাবিলা (৩২) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে উপজেলা সদরের এরুলিয়া খন্দকারপাড়ায় মসজিদের ভেতরে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত কাবিলা বগুড়া সদরের এরুলিয়া জিলাদারপাড়ার মৃত শাবদুল জিলাদারের ছেলে। তিনি মাংসের দোকানের কর্মচারী ছিলেন।
নিহতের মা শিরানা বেওয়া বলেন, রতনের জ্যাঠাতো বোনের ছেলে আরিফুল। আর আরিফুলের বন্ধু ও ভগ্নিপতি আমিন। রতন ছয় বছর আগে বিয়ে করেন। তিন বছর আগে থেকে রতনের স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন আরিফুল। কিছুদিন আগে রতনের স্ত্রীকে আরিফুল ধর্ষণ করেন।
রতনের স্ত্রী বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে আরিফুল ও আমিন তাঁর ঘরে ঢুকতে চান। এ সময় রতন বাড়ি চলে এলে তাঁরা পালিয়ে যান। পরে তিনি রতনকে ঘটনাটি জানান। পরদিন দুপুরে আরিফুল ও আমিন গ্রামের রাস্তায় বসে ছিলেন। এ সময় রতন গিয়ে লাঠি দিয়ে দুজনকে মারধর করেন। আরিফুল বিষয়টি জানালে বিকেলে বাড়িতে পুলিশ আসে। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে রতনকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয় পুলিশ। পরদিন বৃহস্পতিবার রতন আদালতে গিয়ে আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করেন। ধর্ষণ মামলা করার জন্য রোববার তাঁকে সঙ্গে নিয়ে যেতে বলেন আইনজীবী।
নিহতের স্ত্রী আরও বলেন, আরিফুল ও আমিন বুধবার দুপুরের পর থেকে রতনকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। আজ শুক্রবার ভোরে রতন গোদারপাড়া বাজারে মাংসের দোকানে যাচ্ছিলেন। এর পরই তাঁরা রতনকে ধাওয়া করে মসজিদের ভেতরে কুপিয়ে হত্যা করেন।
এরুলিয়া বড় জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মোহাম্মদ আসলাম হোসেন বলেন, ‘আমি ফজরের আজান দিয়ে মসজিদের দরজা খুলে দিয়ে টয়লেটে যাই। এর মধ্যেই মসজিদের বারান্দায় শব্দ শুনতে পাই। টয়লেট থেকে বের হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় একজনকে পড়ে থাকতে দেখে মসজিদের মাইকে ঘটনাটি গ্রামবাসীকে জানাই। পরে গ্রামের লোকজন এসে ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
বগুড়া সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিহত রতনের স্ত্রীকে ইতিপূর্বে ধর্ষণের ঘটনায় দ্বন্দ্বের জেরে খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। ঘটনার পর থেকে আরিফুল, আমিন ছাড়া আরও একজন পলাতক রয়েছেন। তাঁদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ কাজ করছে। ময়নাতদন্তের জন্য রতনের লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বগুড়ায় ধাওয়া খেয়ে মসজিদে আশ্রয় নেওয়া যুবককে কুপিয়ে হত্যা
