স্টাফ রিপোর্টার, বাঘা: রাজশাহীর বাঘায় বিয়ের এক মাসের মাথায় এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ওই গৃহবধূর নাম সাগরিকা আক্তার (১৯)। শুক্রবার (১২ জুলাই) রাত ১১টায় গৃহবধূর স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। গৃহবধূর স্বামী জার্মান হোসেন উপজেলার আড়ানী ইউনিয়নের ঝিনা গ্রামের নওশাদ আলীর ছেলে। নিহত সাগরিকা আক্তার নাটোরের বাগাতিপাড়া থানার উল্লাস গ্রামের আব্দুল গাফফার এর মেয়ে। স্বামীর পরিবারের পক্ষ থেকে গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করলেও নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এটা হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত (জুন) মাসের প্রথম সপ্তাহে পারিবারিকভাবে জার্মান হোসেনের সাথে সাগরিকার বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিবাহের সময় জার্মান হোসেনকে গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে এক লক্ষ টাকা দেবার চুক্তি হয়। বিবাহের সময় প্রদান করেন নগদ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। আর বাঁকি ৫০ হাজার টাকা পরিশোধের জন্য সাগরিকার পিতা চার মাসের সময় নেন।
পারিবারিক সমস্যা ও অভাব অনটনে থাকার কারণই মূলত বাঁকি ৫০ হাজার টাকা পরিশোধের জন্য চার মাসের সময় নেন সাগরিকার পিতা। কিন্তু সাগরিকার স্বামী জার্মান হোসেন নেশা গ্রস্ত হওয়ায় উক্ত টাকা ১৫ দিনের মধ্যে খরচ করে ফেলে এবং বাঁকি ৫০ হাজার টাকার জন্য সাগরিকাকে চাপ সৃষ্টি করে ও নির্যাতন করে। বিষয়টি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে শুক্রবার রাতে সাগরিকা অসুস্থ তাকে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়েছে বলে তার পরিবার কে সংবাদ দেয় জার্মান হোসেন। পরে সাগরিকার পিতা-মাতা ও আত্মীয় স্বজন পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে সাগরিকার মৃত্যুর বিষয়টি জানেন।
নিহত গৃহবধুর পিতা বলেন,যৌতুকের ৫০ হাজার টাকার জন্য আমার মেয়েকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হচ্ছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। এ বিষয়ে নিহতের স্বামী সহ তার পরিবারের কাউকে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
তবে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তদন্ত সোয়েব খান বলেন, পুঠিয়া থানা থেকে আমাদের সংবাদ দেয়া হয়। নিহতের সূরৎহাল রিপোর্ট প্রস্তুত পূর্বক মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলমান রয়েছে। মামলা দায়েরের পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।