নতুন করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির মতো কর্মসূচি দেবেন না : ডিএমপি

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ড. খ: মহিদ উদ্দিন বলেছেন, কোটা নিয়ে বুধবার আদালত একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। সে পরিপ্রেক্ষিতে আর কোটা নিয়ে আন্দোলনের কোনও অবকাশ নেই। আমরা অনুরোধ করব, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আর নতুন করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির মতো কর্মসূচি দেবেন না, অন্তত এই চার সপ্তাহ। এরপরও যদি আন্দোলনের নামে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা হয়, তাহলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। সমসাময়িক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মহিদ উদ্দিন বলেন, গত ১ জুলাই থেকে শাহবাগসহ বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনের কারণে যানবাহন, মানুষের চলাফেরা ও জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছে। নগরবাসীর নিরাপত্তার জন্য ডিএমপি বদ্ধপরিকর। আমরা চেষ্টা করেছি, পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সহনশীল আচরণ করেছি।

তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজের ব্যানারে গত ৬ জুলাই থেকে গতকাল পর্যন্ত বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি শুরু করেছেন। তারা দেশের বিভিন্ন স্থানসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছেন। সাধারণ মানুষ, অ্যাম্বুলেন্স, বিভিন্ন সেবা প্রতিষ্ঠান, ফায়ার সার্ভিস, বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। আমরা শুরু থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি, যেন সবকিছু স্বাভাবিক থাকে।

আরও পড়ুনঃ   অনেক কিছুই স্থবির হয়ে আছে, সবকিছু আবার সক্রিয় করতে হবে

তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের ব্যাপারে হাইকোর্ট একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে কোটা ব্যবস্থা থাকবে না মর্মে পরিপত্র জারি করা হয়েছিল। সেটির ব্যাপারে গত ৫ জুলাই একটি রায় আসে। এরপর বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি শুরু হয়। আপিল বিভাগ থেকে চার সপ্তাহের জন্য সেই নির্দেশনা স্থগিত করা হয়েছে। অর্থাৎ জনপ্রশাসনের সেই পরিপত্র বলবৎ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একত্রিত হয়ে নতুন করে আন্দোলন করার আর কোনও অবকাশ বা প্রয়োজন আছে বলে মনে করে না ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, যারা আন্দোলন করছেন, তাদের প্রতি আমাদের সহমর্মিতা ও ভালোবাসা আছে। কিন্তু আমাদের দেশের প্রচলিত আইন ও দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে আমরা বাধ্য। ছাত্ররা শিক্ষিত, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে আমি অনুরোধ করব, তারা যেন আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর মানুষকে দুর্ভোগ দিয়ে কোনও কর্মসূচি না দেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রতি আমাদের বিনীত অনুরোধ, আর কোথাও নামবেন না।

আরও পড়ুনঃ   প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভারতের হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ

তিনি বলেন, গতকাল ২১টি পয়েন্টে তারা অবস্থান নিয়েছিলেন। আমরা পেশাদারিত্বের সঙ্গে তাদের মোকাবিলা করেছি, কথা বলেছি। এটা মনে রাখতে হবে যে, ৩৬ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নগরবাসীর নিরাপত্তা, চলাফেরা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বাধ্য। কাজেই আমরা আশা করব, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কী আবেদন, সর্বোচ্চ আদালতের যে নির্দেশনা… তারা মানবেন। আদালতের নির্দেশনাও শিক্ষার্থীদের পক্ষেই আছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে মহিদ উদ্দিন বলেন, আদালতের নির্দেশনা ও আমাদের অনুরোধ সত্ত্বেও যদি জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা হয়, তাহলে কিন্তু তা হবে সংবিধান অনুযায়ী ওফেন্স (অপরাধ)। আমি মনে করি, তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করবেন না। কারণ তারা আন্দোলন শুরু করার পর থেকে আমরা এমন কোনও আচরণ করিনি, যাতে তারা আমাদের পেশাককে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারেন।

তিনি বলেন, এরপরও যদি কেউ নিজেদের অবস্থানে থাকেন বা আমাদের কথা না শোনেন, আদালতের নির্দেশনা না মানেন… তাহলে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ আমাদের জবাবদিহিতা তো সবার কাছে। সবার অধিকার তো আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।