কোটা বাতিলের দাবি: ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ রাবি শিক্ষার্থীদের

রাবি প্রতিনিধি : কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে অবস্থান নেন তাঁরা।

এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘মুক্তিযুদ্ধের হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’, ‘সংগ্রাম না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘এই বাংলায় হবে না, বৈষম্যের ঠিকানা’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘এসো ভাই এসো বোন, গড়ে তুলি আন্দোলন’সহ বিভিন্ন ধরনের লেখাসংবলিত ব্যানার, পোস্টার প্রদর্শন ও স্লোগান দিতে শোনা যায়।

চার দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাঁদের দাবিগুলো হলো:

১. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। পরীক্ষায় কোটা-সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
২. যাদের কোটা আছে, জীবদ্দশায় একবারই কোটা ব্যবহার করতে পারবে।
৩. প্রতি ১০ বছর পর পর জনশুমারির সঙ্গে অর্থনৈতিক সমীক্ষা করতে হবে, যাতে কোটার প্রয়োজনীয়তা বোঝা যায়।
৪. দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

আরও পড়ুনঃ   কাশিয়াডাঙ্গা থানার অভিযানে নিখোঁজ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশু উদ্ধার

বিক্ষোভ কর্মসূচির মুখপাত্র ও রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্যসচিব আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার। আমরা হাইকোর্টের বিচারকদের মতো জ্ঞান রাখি না। তবে আমরা এটা জানি, ১ শতাংশের কম জনসংখ্যার জন্য ৩০ শতাংশ কোটা অন্যায্য। এটা বুঝতে পৃথিবীর কোনো আইন জানা লাগে না। আমাদের দাবিগুলো স্পষ্ট, আমাদের আইন বোঝার দরকার নেই। দাবি কীভাবে আদায় করতে হয়, তা বঙ্গবন্ধু আমাদের শিখিয়েছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের ধারাবাহিক আন্দোলন চলবে।’

আরও পড়ুনঃ   অংকের হিসাব লাগে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত -পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী

আন্দোলনে আইন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী উম্মে কুলসুম বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা রাখা যাবে না। আমরা কোটা দিয়ে কামলা না, মেধা দিয়ে আমলা চাই। আমাদের এই সোনার বাংলায় কোটা-ব্যবস্থার ঠাঁই নাই। দাবি আদায় না হলে আমাদের আন্দোলন চলবে।’

আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘আমি চাইছি যে কোটা আন্দোলনটা সফল হোক। আমি প্রথম বর্ষ থেকেই বিসিএসের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমি দেখছি, বন্ধুরাও আমার মতো কষ্ট করে প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু আমি যদি কোটা প্রয়োগ করি, তাহলে আমার চাকরিটা হবে আর তারা বঞ্চিত হবে। তাই আমি চাই, এই কোটা যেন না থাকে। সবাই যেন সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারে।’