স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর হযরত শাহমখদুম (র.) বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা হবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান। তিনি বলেন, ‘রাজশাহীর বিমানবন্দরকে আমরা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার পরিকল্পনা করছি। এটি হলে রাজশাহীর আম বিশে^র বিভিন্ন দেশে চলে যেতে পারবে। অন্যান্য কৃষিপণ্যও রপ্তানি করা যাবে।’
শুক্রবার বিকালে রাজশাহীর কালেক্টরেট মাঠে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড আয়োজিত বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যালের রাজশাহী পর্বের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘রাজশাহীর ঐতিহ্য রেশম। এই রেশমের উন্নয়নে যা যা করা দরকার, তার সবই আমাদের সরকারের করা উচিত। ঢাকায় ফিরেই আমি প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি জানাব। রাজশাহীর আম অনেক দূর চলে গেছে। তারপরও আমের আরও গবেষণা দরকার।’
তিনি বলেন, ‘কানেক্টিভিটির ওপর আমাদের সরকার জোর দিচ্ছে। ঢাকা থেকে আগে রাজশাহী আসতে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা লাগত সড়কপথে আসতে। এখন ৪ ঘণ্টায় আসা যায়। রাস্তায় কাজ চলছে। এগুলো শেষ হলে ৩ ঘণ্টায় আসা যাবে। বিমানবন্দরের উন্নয়ন হবে। রেলপথেরও উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা রাজশাহীকে মাঝে রেখে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে চাই। সেটা হলে রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা এগিয়ে যাবেন বলে আমরা আশা করি।’
পর্যটনের জন্য পদ্মার চরে ‘রিভার সিটি’ গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘রাজশাহীর মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন গতকাল আমার বাসায় গিয়েছিলেন। পদ্মা নদীতে যে চর জেগে আছে সেটা নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানে পর্যটনের জন্য একটা রিভার সিটি করা যায়। আমি তাঁকে কথা দিয়েছি। সবার সহযোগিতায় সেটা আমরা করতে চাই। রাজশাহীতে পর্যটন মোটেল আছে। এটাকে আমরা ফাইভ স্টার মোটেল হিসেবে রূপান্তর করতে চাই।’
রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. শফিকুর রহমান বাদশা বলেন, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক রাজশাহী পর্যটনের অপার সম্ভাবনার জায়গা। দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ জাদুঘর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরের অবস্থান রাজশাহীতে। যেখানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থেকে গবেষক ও দর্শনার্থীরা আসেন। এই রাজশাহীতেই অক্ষেয় কুমার মৈত্র, ঋত্তিক ঘটকের মতো বিখ্যাত মানুষের জন্ম। রাজশাহী একদিকে যেমন সংস্কৃতি ও প্রাচীন স্থাপত্যে সমৃদ্ধ তেমনি শিক্ষা, শান্তি ও সৌন্দর্যের নগরী হিসেবেও খ্যাত। পর্যটনের এই অপার সম্ভাবনাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামানিক, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ড. মাসুদুর রহমান, বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনিসুর রহমান, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল প্রমুখ।
‘আমের স্বর্গে আমন্ত্রণ’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী এই ফেস্টিভ্যালে দেশের নানাপ্রান্তের ঐতিহ্যবাহী জিনিসের প্রায় শতাধিক স্টল রয়েছে। এছাড়া পর্যটনের জন্য দর্শনীয় স্থানের প্রদর্শনী করা হচ্ছে।