লঘুচাপ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাব: আরো কয়েক দিন থাকবে বৃষ্টি

অনলাইন ডেস্ক: লঘুচাপ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সারাদেশে কখনও টিপটিপ বৃষ্টি হচ্ছে, আবার কখনও ঝুম বৃষ্টি। সেই সঙ্গে উত্তাল রয়েছে সমুদ্র। দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেওয়া হয়েছে। আর নদীবন্দরগুলোকে দেওয়া হয়েছে এক নম্বর সতর্ক সংকেত। জুলাই মাসের প্রথম দিনের সকাল থেকেই দেশের আকাশে সূর্যের দেখা মেলেনি। দুপুরের পরপর ঢাকায় শুরু হয় বজ্রসহ মুষলধারে বৃষ্টি। এদিন সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টায় ঢাকায় বৃষ্টির পরিমাণ রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ মিলিমিটার। এ সময়ে সর্বোচ্চ বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে ফেনীতে ১০২ মিলিমিটার। পাশাপাশি নেত্রকোনায় ৮৩ মিলিমিটার, সিলেটে ৭২ মিলিমিটার আর ভোলায় ৭০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, সমুদ্র বন্দরকে দেওয়া তিন সম্বর সতর্ক সংকেত থাকবে আরও দুইদিন। এসময় অব্যাহত থাকবে বৃষ্টি। বৃষ্টি চলতে পারে ৫ জুলাই পর্যন্ত। গত রবিবার পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার জন্য ভারী বৃষ্টির সতর্কতা দিয়েছিল অধিদপ্তর। তারই প্রভাবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হচ্ছে।
অধিদপ্তর জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় থাকা লঘুচাপটি মৌসুমি অক্ষের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, এর প্রভাবে রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
বৃষ্টি হলেও গরম কেন কমছে না প্রশ্নে শাহীনুল ইসলাম বলেন, সারাদেশেই তাপমাত্রা প্রায় ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস চলছে। কিন্তু গরমটা অনুভুত হচ্ছে বেশি। তা মূলত আর্দ্রতা বেশি থাকার কারণেই। বাতাসে যেহেতু আর্দ্রতা বেশি তাই গরম কমছে না, বরং রয়েছে অস্বস্তিভাব।
সমুদ্রবন্দরের সতর্কবার্তা নিয়ে তিনি বলেন, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবল থাকায় উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চরণশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত রয়েছে এবং বায়ুচাপে তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানাচ্ছে, সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া সতর্কবার্তায় বলা হয়, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ঢাকা, ফরিদপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে এক নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।