স্বামীর বাড়িতে রাবি শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক : গত ১৯ জুন শ্বশুরবাড়িতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তারের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। পরদিন সকালে খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। আড়াইহাজারের ফতেপুর ইউনিয়নের বগাদী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সাদিয়া আক্তার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি আড়াইহাজারের হাইজাদী ইউনিয়নের কলাগাছিয়া এলাকার ফায়েজ ভূঁইয়ার মেয়ে।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দেড় বছর আগে পারিবারিকভাবে স্থানীয় ফতেপুর ইউনিয়নের বগাদী এলাকার আব্দুর রবের ছেলে আজিজুল ইসলামের (ফুফাতো ভাই) সঙ্গে বিয়ে হয় সাদিয়া আক্তারের। আজিজুল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫তম আবর্তনের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। বিয়ের পর থেকে শাশুড়ি খোদেজা বেগম সাদিয়ার ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন। স্বামী আজিজুল একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করার সুবাদে বিভিন্ন এলাকায় থাকতেন। এ কারণে সাদিয়া অধিকাংশ সময় বাবার বাড়িতেই থাকতেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে সাফুয়ান নামে ৯ মাসের একটি সন্তান রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ   ঈশ্বরদীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে থানা চত্বরে উত্তেজনা

মৃতের বাবা ফায়েজ ভূঁইয়া বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ দিচ্ছে কিন্তু এসে দেখি তার হাত ও গলায় অনেক মারধরের আঘাত এবং তার ঘরের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর করা। আমি মৃত্যুর আসল কারণ জেনে এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এদিকে এ ঘটনার পর থেকে সাদিয়ার শ্বশুরবাড়ির লোকজন গা ঢাকা দিয়েছেন। আড়াইহাজার থানা পুলিশের অফিসার্স ইনচার্জ আহসানউল্যাহ জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।

আরও পড়ুনঃ   রাজশাহীতে ৬০ বছরের এক নারীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি কাজী রবিউল আলম বলেন, সাদিয়া আক্তারের মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত। সে অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলে। স্নাতক প্রথম বর্ষ পরীক্ষায় সিজিপিএ-৪ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিল। পরে কোনো ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি। কিছুদিন পর খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তার বিয়ে হয়ে গেছে। একজন শিক্ষার্থীর এমন মৃত্যু কখনোই কাম্য নয়। বিভাগের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী সাদিয়ার মৃত্যুর সঠিক তদন্ত করার দাবি জানিয়েছেন।